গ্রেফতার খালেদ তবুও থেমে নেই চাঁদাবাজি

রাজধানীর মতিঝিল, খিলগাঁও, শাহজাহানপুর এলাকা ছিল যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার সাম্রাজ্য। তিনি ছিলেন এসব এলাকার ক্যাসিনো, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসদের নিয়ন্ত্রক।

বর্তমানে এই যুবলীগ নেতা গোয়েন্দা হেফাজতে থাকলেও ওইসব এলাকায় তার নামে চাঁদবাজি থামছে না। আগের মতোই সমান দাপটে তৎপর রয়েছে তার ক্যাডার বাহিনী।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর খালেদ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর এলাকাবাসী ভেবেছিল তার অনুপস্থিতিতে এসব এলাকায় চাঁদাবাজি আপাতত বন্ধ হবে। কিন্তু বিষয়টি উল্টো হয়েছে।

আরও পড়ুন :
অপু বিশ্বাস দ্বিতীয় বিয়ে করতে চলেছে
ঝুঁকিতে রেলস্টেশন ভবন

এলাকাবাসীকে হতবাক করে দিয়েছে খালেদের ক্যাডার বাহিনী। তারা খালেদের অনুপস্থিতিতেও চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানা যায়, এরইমধ্যে পরিবহন থেকে খালেদের নামে চাঁদা তোলা শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবারও খিলগাঁওয়ের লেগুনা স্ট্যান্ড থেকে চাঁদা নেয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

এছাড়াও চাঁদা তোলা মতিঝিলের ফুটপাত, শাহজাহানপুর বাজারস্থ বিভিন্ন এলাকা থেকে। জানা যায়, খালেদের অনুপস্থিতিতে এই চাঁদাবাজিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে তার ঘনিষ্ঠ কর্মী জামাল।

র‌্যাবের কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন বলেন, কারা কিভাবে চাঁদাবাজি করছে বিষয়গুলো আমরা নজরে রাখছি। এদেরও গ্রেফতার করা হবে।

ফুটপাত বিক্রেতা আলাউদ্দিন মিয়া জানান, তার দুই ছেলে, এক মেয়ে। দুজনই স্কুলে পড়ছে। ফুটপাতের এই দোকান করে রোজ ৮০০-৯০০ টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু সেখান থেকে চাঁদা দিতে হয় ২০০-৩০০ টাকা।

তিনি আরও জানান, তিনি প্রতিদিন ইমরান নামের একজনকে চাঁদার টাকা দেন। গত সপ্তাহে ইমরানকে আসতে দেখেননি। তবে শনিবার থেকে তার জায়গায় আলাউদ্দিন নামের অপর এক ব্যক্তি চাঁদা নিতে আসছেন।

জানা যায়, এ ইমরানও গ্রেফতার হওয়া যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার লোক। ইমরান, সজীব ও কালুসহ কয়েকজন মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তান এলাকার ফুটপাত থেকে চাঁদা তোলেন। প্রতিটি দোকান থেকে ২০০-৩০০ টাকা করে নেন তারা। ওই এলাকা থেকে প্রতিদিন লাখ টাকার বেশি চাঁদা ওঠে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খালেদ গ্রেফতার হওয়ার পর কয়েক দিন চাঁদাবাজদের দেখা যায়নি। কিন্তু ২/৩ দিন ধরে তারা আবার এলাকায় আসতে শুরু করেছে।

দেশ দর্পণে আরও পড়ুন :
ঘুষ দিলে তাকেও শাস্তি পেতে হবে -প্রধানমন্ত্রী
ভয়াবহ বন্যায় ভারতের চার রাজ্যে নিহত ১২০

এদের মধ্যে জামাল অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। এছাড়া খালেদ গ্রেফতারের পর কয়েক দিন অঙ্কুর, উজ্জল, রিপন, সাধুসহ বেশ কয়েকজনকে এলাকায় দেখা যায়নি। ২/৩ দিন ধরে তারা আবার প্রকাশ্যে আসছে।

জানা যায়, খিলগাঁও এলাকার লেগুনা স্ট্যান্ড থেকে ১২২টি লেগুনা চলাচল করে। এসব লেগুনার প্রতিটিকে দৈনিক ৭০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। শুধুমাত্র খিলগাঁও লেগুনা স্ট্যান্ড থেকেই প্রতিদিন চাঁদা আদায় করা হয় ৮৫ হাজার টাকা।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশান থেকে খালেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। একই দিন মতিঝিলের ফকিরাপুল এলাকায় তার মালিকানাধীন ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ১৪২ জনকে আটক করা হয়।

এরপর গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় প্রথমে ডিবি পরে র‌্যাব রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে খালেদ মাহমুদকে।

সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯ at ১৬:১২:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/জার/আজা