রাবি ভিসির ‘জয় হিন্দ’ বক্তব্য প্রত্যাহার, নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি এম আব্দুস সোবহান শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে রাবি ইতিহাস বিভাগ ও জন ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী ‘Culture, Peace and Education: From the Perspective of People’s History’ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সভাপতির বক্তৃতায় উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান ‘জয় হিন্দ’ বলেছেন বিষয়টি স্বীকার করে সংবাদটি অত্যন্ত চতুর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বলে দাবি করেছেন।

৩০ সেপ্টেম্বর সকালে বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর প্রভাষ কুমার কর্মকার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রশাসনের পক্ষে এ দাবি করেন।

বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, এই সম্মেলনের উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সর্বাঙ্গীন সহযোগিতা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধকালীন এক কোটি শরণার্থীর খাদ্য-বাসস্থানের যোগান দান, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সহযোগিতাকরণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অকুণ্ঠ সমর্থন জ্ঞাপন, সর্বোপরি বিশ্বজনমত সৃষ্টির দ্বারা স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানী কারাগার থেকে মুক্তকরণে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও তাঁর সরকারসহ সে দেশের জনগণের প্রতি অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আরো পড়ুন:
প্রথম চুমুর অভিজ্ঞতা শেয়ার করে আলোচনায় কঙ্গনা
দেশের উদ্দেশে নিউইয়র্ক ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী

তাঁদের এই সহযোগিতার জন্য ভারত রাষ্ট্রের দীর্ঘায়ু কামনা করতে গিয়ে উপাচার্য মহোদয় অতি প্রাসঙ্গিকভাবেই ‘জয় হিন্দ’ শব্দযুগল ব্যবহার করেন এবং তা তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ উচ্চারণের পর বলেন।

কিছু স্বার্থান্বেসী মহল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান স্থিতিশীল অবস্থা ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন-অগ্রগতি রোধে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই ধরনের বিভ্রান্তি ও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।

ভবিষ্যতে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে ঘটনা প্রবাহ ও তার প্রেক্ষিত, প্রাসঙ্গিকতা ও প্রকৃতি বিচার করার জন্য পরামর্শ প্রদান করা যাচ্ছে। কেননা বিষয়গুলো বস্তুনিষ্ঠ ও স্বচ্ছ সংবাদ পরিবেশনের অনুসঙ্গ বলেও দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (বিমক)-এর মাননীয় চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ প্রফেসর কাজী শহীদুল্লাহ। সম্মেলনে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক ইতিহাসবিদসহ রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জীব ভাটিও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রাবি ভিসির এই বক্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। এ কারনে ‘জয় হিন্দ’ বক্তব্য প্রত্যাহার ও জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদও জানিয়েছেন তারা।

সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯ at ১২:৪৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/আসাস/এএএম