প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আজ জন্মদিন

বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাকেই পূর্ণতা দিতে চলেছেন শেখ হাসিনা। আজ এ কথা বলা যায় যে, শেখ হাসিনাই বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের যোগ্য কান্ডারি। তাঁর মধ্যেই মূর্ত হয়ে উঠছে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনে এগিয়ে যাওয়ার নেতৃত্বগুণ তাঁর ভেতর আছে। দলের মধ্যে যে শুদ্ধি অভিযান চলছে, এটা সফল পরিণতি পেলে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এক নতুন মাত্রা পাবে। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই, তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৩তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের এ দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। নিউইয়র্কে অনাড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে তার জন্মদিন উদযাপিত হবে। জন্মদিন উপলক্ষে দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। তার সুস্বাস্থ্য কামনায় মসজিদ-মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা, মিলাদ-মাহফিল, দরিদ্রদের মাঝে খাদ্য বিরতণ ও আলোচনার মধ্য দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। আওয়ামী লীগের আয়োজনে আজ শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শেখ হাসিনার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইতিহাস ও প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে দেশের নেতৃত্ব প্রদান করার বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ দেশের বুদ্ধিজীবীরাও অংশ নেবেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা। ভাইবোনদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া কেউই জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘাতকদের গুলিতে নিহত হন।
শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কাটে টুঙ্গিপাড়ায়। তার শিক্ষাজীবনের শুরু হয় সেখানে। ১৯৫৪ সালে ঢাকায় টিকাটুলীর নারী শিক্ষা মন্দিরে (শেরেবাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ) ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ওই কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রসংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। কলেজজীবন শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৬৮ সালে পরমাণুবিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়। ড. ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা দম্পতির কোলে আসে দুই সন্তান সজীব ওয়াজে জয় ও সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন ড. ওয়াজেদ মিয়ার বাসায়। মা-বাবাসহ স্বজনদের হারিয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার এক অবর্ণনীয় দুঃসহ জীবন শুরু হয়। নানা দেশ ঘুরে তাদের আশ্রয় মেলে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। দীর্ঘ নির্বাস জীবন শেষে ১৯৮১ সালে দেশের ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন।
নিজের বিচক্ষণতা, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তায় শেখ হাসিনা দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরে ২০০৯ সালে আবার প্রধানমন্ত্রী হন। তখন থেকে এখন পর্যন্ত টানা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
রাজনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনার জন্য কখনই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ১৯ বার তিনি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছেন। সবচেয়ে বর্বরোচিত হামলাটি হয় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট।
শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিকভাবে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি শান্তি, গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য পদক আর পুরস্কারে।