রাজধানীর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের ডিরেক্টর ইনচার্জ ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াও ক্যাসিনো থেকে কোটি কোটি টাকা অবৈধ উপার্জন করেছেন।
তবে ক্লাবের ক্যাসিনোটি পরিচালনা করতেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এ কে এম মোমিনুল হক ওরফে সাঈদ কমিশনার। আর এসব টাকার একটি অংশ লোকমান অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাংকে জমা রেখেছেন। এর পরিমাণ ৪১ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে র্যাব।
এছাড়া জুয়ার টাকা দিয়ে মালয়েশিয়ায় বাড়ি নির্মাণ করেছেন তিনি। সেখানকার একটি হোটেলেও তার বিনিয়োগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাব। বসিলায় র্যাব-২ কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এদিকে সন্ধ্যায় লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে তেজগাঁও থানায় হস্তান্তর করেছে র্যাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার আনিসুর রহমান। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
র্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ জানান, আমরা অনেক দিন ধরে লোকমানকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু তিনি গ্রেফতার এড়াতে নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলায় অবস্থান করছিলেন। বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, তিনি তার মনিপুরীপাড়ার বাসায় এসেছেন। তখন আমরা বাসা ঘেরাও করে তাকে গ্রেফতার করি।
ক্যাসিনোর ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে ২১ লাখ টাকা পেতেন লোকমান। সেই হিসেবে তিনি (লোকমান) প্রতিদিন পেতেন ৭০ হাজার টাকা করে। র্যাব অধিনায়ক জানান, মোহামেডান ক্লাবের পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে একটি রেজ্যুলেশন করে ক্যাসিনোর জন্য কক্ষ ভাড়া হিসেবে ওই টাকা নেওয়া হতো। তবে টাকার প্রায় পুরোটাই ভোগ করতেন লোকমান।
সূত্র জানায়, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর জন্য প্রতি রাতের ভাড়া হিসাবে মাত্র ২৫ হাজার টাকা ক্লাবের ফান্ডে জমা হতো। আর বাকি টাকা লোকমানের হাতে চলে যেত।
প্রতি রাতে ক্যাসিনোর চাঁদা বাবদ ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা হাত বদল হতো। লোকমানকে আটক করার সময় তার বাড়িতে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে। তবে ক্যাসিনো কেলেঙ্কারির জন্যই তাকে আটক করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাংকে তার ৪১ কোটি টাকা রয়েছে। তার ছেলে অস্ট্রেলিয়ায় পড়ার সুবাদে তিনি মাঝে মাঝেই অস্ট্রেলিয়াতে যান। লোকমানের পাশাপাশি মোহামেডান ক্লাব পরিচালনা কমিটির আর কেউ এই জুয়াচক্রে জড়িত কিনা, তা ও খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রসঙ্গত, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগ। ক্লাব থেকে ১৬টি ডিজিটাল ক্যাসিনো বোর্ড, তাস খেলার বিপুল পরিমাণ সামগ্রী, জুয়া খেলার সামগ্রী এবং মাদকদ্রব্য (মদ, সিসা) উদ্ধার করা হয়।
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৯ at ১২:১৭:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/ইফা/আজা