যৌন হয়রানির প্রতিবাদে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিলসহ প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় বঙ্গমাতা ফলিজাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট বিথিকা বনিকের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে পদত্যাগের দাবি নিয়ে বঙ্গমাতা হলের সামনে এসে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে পদত্যাগের দাবি জানায়।

অভিযোগ তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌন হয়রানির শিকার মেয়েটি বিথিকা বণিকের বাসায় টিউশন করাতে গিয়েছিলো। বাহিরে বৃষ্টি হওয়ায় রাত তার বাসায় অবস্থান কালে তার ভাই শ্যামল বণিক মেয়েটি যৌন হয়রানি করে। একজন শিক্ষার্থী যদি শিক্ষিকার বাসায় নিরাপত্তা না পায়, তাহলে এত বড় হলের শিক্ষার্থীরা কিভাবে নিরাপদ থাকবে।

ঘটনার পরবর্তী সময়ে থেকে মেয়েটিকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজসহ মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। একজন শিক্ষক হিসেবে তা করতে পারেন না। ধর্ষকে যেভাবেই হোক তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং হলের প্রভোস্ট পদ থেকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি মেয়েটির নামে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন সেজন্য তাকে সবার সামনে ক্ষমা চাইতে হবে। এসময় শিক্ষার্থীরা বিথিকা বণিকের নানা অভিযোগ তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন:
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় রাবি প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা!
যবিপ্রবিতে ইনডেমনিটি নাটক মঞ্চায়িত

সুষ্ঠ বিচার ও শিক্ষার্থীদের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে কয়েকটি দাবি উত্থাপন করে। অপরাদের জন্য শাস্তি নিশ্চিত করা , বিথিকা বনিকাকে প্রাথমিক স্টেটমেন্ট দেয়া, মেয়েটির পরিবারের কোন প্রকার চাপ না দেয়া, নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার পদত্যাগ করা, কুরুচিপুর্ণ কথা বলেছে তার ক্ষমা চাওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে পদক্ষেপ নেওয়া প্রতিটি হল, ডিপার্টমেন্ট সেল গঠন করা এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর লুৎফর রহমান বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে সেটা খুবই দুঃখজনক। মেয়েটি আমাদের ছাত্রী , আমাদেরই মেয়ে। এ ধরনের ঘটনা মেনে নিতে পারিনা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মেয়েটিকে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অভিযুক্ত প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবির প্রেক্ষিতে প্রক্টর বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো এবং সমস্ত ঘটনা সত্যতা আমরা খুঁজে পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উপযুক্ত শাস্তি ব্যবস্থা করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা লায়লা আরজুমান বানু বলেন, এ ঘটনার জন্য অভিযুক্তকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিথিকা বণিকের বাসায় টিউশনি করাতে গিয়ে অবস্থানকালে যৌন হয়রানি শিকার হন ইংরেজি বিভাগের ঐ শিক্ষার্থী। এরপর ঘটনার কথা পুলিশকে জানালে, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত শ্যামল বণিককে আটক করে মতিহার থানার পুলিশ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা হাফিজুর রহমান।

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯ at ২১:৫০:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসএস/কেএ