রাজশাহীতে মাত্র ৯৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মার পানি। পানির বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় পানির উচ্চতা মাপা হয়েছে ১৭ দশমিক ৫১ মিটার। অর্থাৎ বিপদসীমা ছুঁই-ছুঁই করছে পদ্মার পানি।
পানি বাড়ার কারণে নদী তীরবর্তী রাজশাহীর পবা উপজেলার নিম্নাঞ্চাল এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে সেখানকার অর্ধশতাধিক পরিবার দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের খোলাবোনা, পুরাতন কসবা ও বেলুয়ার চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দুই হাজার বিঘা জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
প্রতিদিনই প্রায় ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার পানি বাড়ছে। এতে নতুন করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন পদ্মাপাড়ের মানুষ। বিশেষ করে তীরবর্তী মানুষগুলো এই আশ্বিনে ভাঙনের শঙ্কা করছেন।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার এনামুল হক জানান, গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় রাজশাহীর পদ্মা নদীতে পানির উচ্চতা মাপা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৩৬ মিটার। তাই পদ্মায় পানির বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও এ বছরে এটাই সর্বোচ্চ।
এনামুল হক আরও বলেন, গত ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা (১৮.৫০) অতিক্রম করেছে মাত্র দুই বার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার।
এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এরপর পানি বাড়লেও আর এই রেকর্ড ভাঙেনি বলেও উল্লেখ করেন পাউবোর এই গেজ রিডার।
রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল আলম বলেন, ‘গত ২ জুলাই রাজশাহীতে পদ্মার পানি হঠাৎ ১০ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার বেড়ে দাঁড়িয়েছিল। এরপর থেকে পানি আবার কমতে শুরু করে। তবে ৭ জুলাই থেকে পানি আবার বাড়তে শুরু করে। সবশেষ ২০ জুলাই পানির সর্বোচ্চ উচ্চতা হয় ১৫ দশমিক ৮৬ মিটার। তারপর থেকে পানি একটু একটু করে কমতে শুরু কর।
এরপর আবারও আগস্টে বাড়ে। আবার কমতে শুরু করে আগস্টেই। কিন্তু বর্তমানে পদ্মায় পানির যেই প্রবাহ, তা দেখে ধারণা করা হচ্ছে পানি বাড়ার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। পুরো সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পদ্মার পানি কখনও বাড়বে আবার কখনও কমবে।
তবে বিপদসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা এখনও কম। আর রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর শহররক্ষা বাঁধের উচ্চতা ১৯ দশমিক ৬৭ মিটার। তাছাড়া মহানগরীর পশ্চিমাংশে বুলনপুর থেকে পবার সোনাইকান্দি পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার বাঁধ সংরক্ষণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তাই পদ্মার পানি বাড়লেও বাঁধ নিয়ে মহানগরবাসীর এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই বলেও মন্তব্য করে নির্বাহী প্রকৌশলী।
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯ at ২৩:৪৪:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/মারারা/এএএম