বর্ষসেরা নারী ফুটবলার ম্যাগান রাপিনো

ইতালির অন্যতম ব্যস্ততম শহর মিলানে গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। যেখানে ছেলেদের বিভাগে ভার্জিল ভন ডাইক ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পেছনে ফেলে ষষ্ঠবারের মতো বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার জিতেছেন স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি।

আর বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের পুরস্কার উঠেছে ম্যাগান রাপিনোর হাতে। সম্মানজনক এই পুরস্কার জিততে অলিম্পিয়াক লিঁওর লুসি ব্রোঞ্জ ও অরলান্ডো প্রাইডের অ্যালেক্স মরগানকে পেছনে ফেলেছেন তিনি। সোমবার রাতে ইতালির মিলান শহরের অপেরা হাউস লা স্কালায় এবারের ২০১৯ সালের বর্ষসেরা নারী ফুটবলার হিসেবে রাপিনোর নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই ফুটবলপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন এই নারী ফুটবলার।

ম্যাগান রাপিনোর জন্ম ১৯৮৫ সালের ৫ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়। বর্তমানে ৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার একজন ফরোয়ার্ড। তবে দলের প্রয়োজনে অনেক সময় মিডফিল্ডেও খেলতে দেখা যায় তাকে।

ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল তার। ইউনিভার্সিটি অব পোর্টল্যান্ডের হয়ে খেলে নজর কাড়েন সবার।

২০০৩-২০০৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলেছেন রাপিনো। সেখানে ২১ ম্যাচে ৯ গোল করে ডাক পান জাতীয় দলে। ২০০৬ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলছেন এই নারী ফুটবলার।

আরো পড়ুন:
পঁয়ত্রিশ বছরেও নির্মাণ করতে পারেনি, লক্ষ্মীপুর জেলা গেট
সুনামগঞ্জে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা ৬ শিশুসহ ৮ জন

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে ১৫৮টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। করেছেন ৫০ গোল। ক্লাব ফুটবলে তার পদচারণা শুরু হয় ২০০৯ সালে।

শুরুটা হয় নিজ দেশের ক্লাব চিকাগো রেড স্টারের হয়ে। পরবর্তী সময়ে খেলেছেন পিলাডেলপিয়া ইন্ডিপেন্ডেস, ম্যাজিক জ্যাক, সিডনি এফসি, সিটল সাউন্ডার্স ওমেন ও অলিম্পিয়াক লিঁওতে।

২০১৩ সাল থেকে আমেরিকান ক্লাব রেইন এফসির হয়ে খেলছেন রাপিনো। নিজ দেশের এই ক্লাবটির হয়ে এ পর্যন্ত ৩৫ ম্যাচে ৩৭ গোল করেছেন তিনি।

২০১৯ সালের ফিফা নারী বিশ্বকাপে আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ম্যাগান রাপিনোর। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচেই দুর্দান্ত পারফরমেন্স করেন তিনি। মোট ৬ গোল করে জিতে নেন সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট।

এ ছাড়া আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বলও উঠে তার হাতে। বিশ্ব কাপে এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্স করা ম্যাগান রাপিনোই যে এবারের বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের পুরস্কার জিতবেন সেটা একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল।

রাপিনোর জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার রেডিং নামক এলাকায়। তার বাবার নাম জিম রাপিনো। আর মায়ের নাম ডেনিশ রাপিনো। পড়ালেখা করেছেন ফুটহিল হাইস্কুল ও ইউনিভার্সিটি অব পোর্টল্যান্ডে। রাপিনোরার ৫ ভাই-বোন। এদের মধ্যে আবার ম্যাগান রাপিনো ও রাসেল রাপিনো যমজ। বড় ভাই ব্রায়ানের ফুটবলের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। তাকে দেখেই খেলাটির প্রতি ভালোলাগা তৈরি হয় ম্যাগান রাপিনোর। আর এখন তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নারী ফুটবলার।

ম্যাগান রাপিনো একজন সমকামী। গণমাধ্যমের সামনে নিজের সমকামী বৈশিষ্ট্যের কথা স্বীকার করা প্রথম নারী ফুটবলার তিনি। ২০১৫ সালের লন্ডন অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বর্ণ জেতার পেছনে অন্যতম অবদান রাপিনোর। এ ছাড়া ২০১৯ সালের আগে ২০১৫ বিশ্বকাপেও যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যাম্পিয়ন করেন এই ফরোয়ার্ড।

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯ at ১৩:৪৯:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/ভোকা/এএএম