প্রতিমার অপেক্ষায় পাঁচ শতাধিক পূজা মন্ডপ, ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎ শিল্পীরা

হাটি হাটি পা পা করে ঘনিয়ে আসছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দৃর্গা পুজা। এবছর সিরাজগঞ্জ জেলা সদরসহ উপজেলাগুলোতে প্রায় পাঁচ শতাধিক পুজা মন্ডপ তৈরী করা হচ্ছে। জেলার কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাটের পালপাড়ায় জোরেশোরেই চলছে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ।

সিরাজগঞ্জের বেশিরভাগ এলাকার পূজা মন্ডপই সাজে এই পাল বাড়ির প্রতিমায়। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেন এখানকার প্রতিমা শিল্পীরা। হাতের নিপুণ কারিগরিতে একেকটি প্রতিমা গড়ে তোলে তারা।নরম কাদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দুর্গার প্রতিমায় ভরে উঠেছে পালপাড়ার প্রায় প্রতিটা বাড়ি।

নানান রঙ আর তুলির আঁচরে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবীর প্রতিচ্ছবি। তাই যেনো ঘুম নেই পাল বাড়ির কারিগরদের। দেবী দূর্গাকে স্বাগত জানাতে প্রতিমা তৈরী ও মন্দির সাজসজ্জায় শিল্পীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে চুক্তিতে এসে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

মার আগমনে প্রতিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বইছে। দেবীর আগমনে প্রতিমা শিল্পীরা এখন প্রতিমার গায়ের তুলির আঁচড় দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মায়ের ভক্তরাও।

ভদ্রঘ্ট এলাকার প্রতিমা কারিগর শ্রী কান্ত পাল বলেন, বর্তমানে প্রতিমা তৈরির উপকরনের দাম বেশি, ফলে প্রতিমা তৈরি করে খুব একটা লাভ হয় না। তারপরও পূর্বপুরুষের পেশা হিসেবে তারা প্রতিমা তৈরি করেন।

আরও পড়ুন:
বৃদ্ধ শারীরিক প্রতিবন্ধীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম
মীনা দিবস পালিত ও শোভাযাত্রার আয়োজন

একই এলাকার উজ্জল পাল বলেন, এখন প্রতিমা গড়ার কাজ প্রায় ৯০% শেষ, ফলে প্রতিমার রঙ্গের কাজ শুরু হয়েছে। রং এর তুলিতে সাজানো হচ্ছে প্রতিমা গুলো।

মৃৎ শিল্প কারিগর গোপিনাথ পাল বলেন, এবছর ২২টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছি। অর্ডার অনুযায়ি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এখনও অর্ডার আসছে তবে এখন আর অর্ডার নেওয়া হচ্ছে না। যে প্রতিমাগুলোর কাজ শুরু করেছেন সেগুলোরই কাজ চলছে। তিনি আরো বলেন, এবার ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে প্রতিমা ।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা জুড়ে প্রায় পাচ শতাধিক মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠ-সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে এ বছর দূর্গাপূজা আয়োজনের জন্য এরইমধ্যে পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাউদ জানান. সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই উৎসব উদযাপনে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে পূজামন্ডপগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করন ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের সাথে দফায় দফায় মতবিনিময় করা হচ্ছে। সুন্দর ও সুষ্ঠ ভাবে এবার পূজা উদযাপন হবে তিনি জানান।

তবে মৃৎ বা প্রতিমা শিল্পীরা বলছেন সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কোন সুযোগ সুবিধা না পাওয়ায় এশিল্প টিকে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারী সুযোগ সুবধা পেলে এশিল্পের প্রসার ঘটাতে পারবে বলে তারা আশাবাদী। তাই সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯ at ২০:৩৭:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এজিএল/এএএম