কন্যাযাত্রী নিয়ে বিয়ে করে স্বামীকে নিয়ে গেল বউ !

প্রচলিত নিয়মানুযায়ী যাত্রীসহ বর কনের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করেন। এবার ব্যতিক্রমী এক ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামে। আনুষ্ঠানিকতা সেরে বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন কনে।

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিয়ের কনে যাত্রীদের নিয়ে স্বয়ং বরের বাড়িতে হাজির হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। যৌতুকমুক্ত বিয়ে ও নারী অধিকার নিশ্চিত করতে উভয় পরিবারের আয়োজনে এই বিয়ে বলে জানিয়েছেন তারা।

আড়ম্বরপূর্ণ বিয়ের আয়োজন। বরের বিয়ে বাড়ির আশেপাশে আয়োজনের কমতি নেই। দৃষ্টিনন্দন বিয়ের গেটের দুই পাশে লাইনে দাঁড়ানো অসংখ্য মানুষ। বিয়ের বহর গেটের কাছে আসতেই এক অন্যরকম উত্তেজনাকর আনন্দ। মাইক্রোবাস থেকে নামলেন লাল বেনারসি শাড়ি পরা বধূবেশে কনে।

কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজে অনার্স পড়ুয়া চুয়াডাঙ্গার হাজরাহাটি গ্রামের কামরুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আক্তার খুশি তার পরিবার ও কনেযাত্রীদের নিয়ে বিয়ে করতে আসেন বর মেহেরপুরের গাংনীর চৌগাছার কমরেড আব্দুল মাবুদের ছেলে তরিকুল ইসলাম জয়ের বাড়িতে। ভিন্নধর্মী এবিয়ের আয়োজন ঘিরে এলাকার মানুষেরও উৎসাহ উদ্দীপনার কমতি ছিল না।

বিয়ের পর বরপক্ষের নিমন্ত্রিত আত্মীয়-স্বজন ও কনেযাত্রীদের ভুড়িভোজ করানো হয়। বিকেলে বরকে নিয়ে কনে চলে যান তার বাড়িতে। সেখানে কয়েকদিন কাটানোর পর কনেকে সঙ্গে নিয়ে বর ফিরে আসবেন আপনালয়ে।

কনের বাবা কামরুজ্জামান বলেন, “মেয়ের আবদারেই বিয়ের আয়োজনটা এভাবে করা হয়েছে। যদিও প্রথমদিকে আমার আপত্তি ছিল।”

প্রতিক্রিয়ায় কনে খাদিজা আক্তার খুশি বলেন, “নারী-পুরুষের সমান অধিকার হিসেবে একজন মেয়ে একজন ছেলেকে বিয়ে করতে তার বাড়িতে যেতে পারেন তা কখনও বাস্তবায়ন হয়নি। সেই বাধার বৃত্ত ভেঙে আমি শুরু করেছি আশা করছি অনেকেই এখন এটি করবেন।”

বরের বাবা কমরেড মাবুদ বলেন, “নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার রয়েছে। মুখে আমরা বললেও তা বাস্তবায়ন করছি কতটুকু? তাই আমি এই আয়োজনের মধ্যদিয়ে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি সামনে আনতে চেয়েছি।”

বর তরিকুল ইসলাম জয় বলেন, “বিয়েতে সবাই কনের বাড়িতে যায় আমার বিয়েতে কনে এসেছে বিয়ে করতে। এতে বেশ ভালোই লাগছে!”