ডেঙ্গু আক্রান্ত কলেজছাত্রের মৃত্যু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে এবার তারেক রহমান (২২) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার দুপুরের দিকে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এর একদিন আগে তার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খলিসাকুণ্ডি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিনের ছেলে তারেক রহমান গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে জ্বরে আক্রান্ত হন।

ওইদিন তাকে পার্শ্ববর্তী মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে রক্ত পরীক্ষায় তার শরীরে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে তারেক রহমানকে ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

শনিবার বিকালে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

সেখান থেকে অবস্থার আরো অবনতি হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তারেক খলিসাকুণ্ডি ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম হোসেন ফরাজি সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তারেক মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। দুদিন ধরে তাকে সেখানেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।

আরও পড়ুন:
উপজেলা ফটোজার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের প্রথম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
ফেনসিডিলসহ একজনকে আটক

কিন্তু শনিবার সকালে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল রেফার্ড করা হয়। এ নিয়ে উপজেলার খলিসাকুণ্ডি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হলো।

এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর জোসনা খাতুন (৫৫) নামে এক মহিলা মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ওই গ্রামের আসাদুজ্জামান মণ্ডলের স্ত্রী।

প্রসঙ্গত, দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের ছাতারপাড়া গ্রামে গত ২৬ আগস্ট সর্বপ্রথম একযোগে ৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়।

আকস্মিকভাবে এতজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর কয়েকদিনে ওই গ্রামের ৭০ পরিবারের মধ্যে ৪২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও এ উপজেলায় ৬০ জনেরও বেশি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়।

১ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল হঠাৎ করে ডেঙ্গু ছড়ানোর কারণ অনুসন্ধানে এ উপজেলায় আসেন। তারা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে দুদিন পর ঢাকায় ফিরে যান।

অন্যদিকে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার, দৌলতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. এজাজ আহমেদ মামুন, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করলেও স্থানীয় সংসদ সদস্য অা. কা. ম. সারওয়ার জাহান বাদশাহ্কে আক্রান্ত এলাকায় দেখা যায়নি।

এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদপত্রে খবর বের হলে সংসদ সদস্যের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকায় যান। সংসদ সদস্য সারওয়ার জাহান বাদশাহ্ অসুস্থ থাকার কারণে আক্রান্ত এলাকায় যেতে পারেননি জানিয়ে তার প্রতিনিধি দলটি মশক নিধনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।

সমালোচনার মুখে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সংসদ সদস্য আ.কা.ম. সারওয়ার জাহান বাদশাহ্ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে একটি অনুষ্ঠানে যোগদানের পর কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধানী ডেঙ্গু রোগীদের দেখতে যান।

সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৯ at ২১:৩৪:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসআরএস/এএএম