পুলিশ কর্মকর্তার পরামর্শে যৌতুক দিয়ে ধর্ষকের সঙ্গে শিশুর বিয়ে !

লালমনিরহাটে যৌতুক দিয়ে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের শিকার এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। জেলা সদর থানার এসআই মাইনুল ইসলামের পরামর্শে ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে উল্টো ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়ে বিয়ে দেন মেয়েটির ভ্যানচালক বাবা।

এদিকে বিয়ে হলেও মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কাবিননামা হাতে পায়নি তার পরিবার। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছেলেপক্ষ বিয়ে অস্বীকার করে মেয়েটিকে ঘরে তুলছে না। তারা উল্টো এলাকাছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে মেয়ের পরিবারকে। মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পুলিশ অভিযোগটি আমলে নিলে তাদের এমন নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

আরও পড়ুন:
পর্ণগ্রাফি মোবাইলে ডাউনলোড করে দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার ৬
মামলা স্থানান্তর, খালেদকে ডিবিতে জিজ্ঞাসাবাদ

লালমনিরহাটে মেয়ের বাবা জানান, প্রতিবেশী অচিমন বিবির বাড়িতে স্থানীয় কয়েক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতেন একই ইউপির উমাপতি হরনারায়ণ গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে শাহিন আলম। সেখানে সপ্তম শ্রেণির ওই মেয়েটিকেও মাসিক ৪০০ টাকা বেতনে পড়তে দেন তার বাবা। কিছুদিন পড়ার পর শাহিন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। সে রাজি না হলে শিক্ষক তার মোবাইল ফোনে আগে গোপনে তোলা কয়েকটি ছবি দেখিয়ে হুমকি দেন। শিক্ষক তাকে বলেন- যদি তার প্রস্তাবে রাজি না হয়, তবে এসব ছবি খারাপ বানিয়ে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেবেন। এই ভয় দেখিয়ে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন তিনি। পরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বাচ্চা নষ্ট করতে ওষুধ খাওয়ান শাহিন। ওষুধে কাজ না হলে গত ২৫ জুলাই ওই শিক্ষার্থীকে কৌশলে তুলে নিয়ে শহরের মেরী স্টোপ ক্লিনিকে অবৈধ গর্ভপাত ঘটান। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ইউপি চেয়ারম্যানের পরামর্শে মেয়েটির বাবা গত ১১ আগস্ট সদর থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই এসআই মাইনুল ইসলাম বাড়িতে এসে মেয়েটিকে বলেন বিয়ে করবা নাকি জরিমানা নিবা। একপর্যায়ে এসআই বলেন, ৫০ হাজার টাকা দিলেই ছেলেপক্ষ বিয়েতে রাজি হবে। মেয়ের মা বলেন, ‘বাহে, গরিব বলি হামার কি মান-সম্মান নাই? হামাকগুলাক এলাকাছাড়া করার হুমকি দেয়।’

লালমনিরহাট থানার ওসি মাহফুজ আলম বলেন, এসপি বিষয়টি দেখার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মেয়ের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় তাদের বিয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী- এমন কথা জানিয়েছেন এসআই মাইনুল।

এসপি এস এম রশিদুল হক বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে এ ঘটনায় জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯ at ১৩:২০:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/ভোকা/আক