ছাত্রী বহিষ্কারের ঘটনায় জাবিতে কর্মরত সাংবাদিকদের মানববন্ধন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিক ফাতেমা তুজ জিনিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস গুলোতে স্বাধীন সাংবাদিকতা পরিবেশ নিশ্চিত করনের দাবিতে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন করেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থী ও ডেইলি সানের প্রতিনিধি ফাতেমা তুজ জিনিয়ার বহিষ্কার এবং উপাচার্যের অসুলভ আচরন ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানান।

ডেইলি স্টারের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সহসভাপতি মো: আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীর সাথে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। সারা বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্থানে এ ধরনের অবিচার এবং স্বৈরাচারী আচরন প্রত্যাশিত নয়। জিনিয়ার সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।’
ঢাকা ট্রিবিউনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সোয়ায়েব রহমান সজীব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চা ও মুক্তচর্চার স্থান। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করতে শিখবে, গঠনমূলক সমালোচনা করতে শিখবে। এর বিপরীতে আমরা দেখছি শিক্ষার্থীদের কন্ঠরোধ করা হচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে সাংবাদিকতা এবং বাক স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি।’

দৈনিক যায়যায় দিনের বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু মূসা বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। দেশের প্রত্যেকটা নাগরিক সংবিধানে উল্লেখিত অধিকার ভোগ করবে সেই দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন:
গাঁজাসহ নারী মাদক ব্যাবসায়ী আটক
প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থীদের মাঝে স্কুল ড্রেস ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসকদের স্বৈরাচারী মনোভাব শিক্ষার্থী সংক্রান্ত তাদের যে ভাবনা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, যে আমরা এই জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চাইনি। বাংলাদেশে মুক্ত বুদ্ধিচর্চার জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রের বিবেক বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসকের বক্তব্য কখনো এমন নগ্ন হতে পারেনা। আমরা বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সমাজতান্ত্রীক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারন সম্পাধক মোহাম্মদ দিদার বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলব আজকে যে প্রতিবাদি মানববন্ধন এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ। এটা কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ? বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় জনগণের ক্যান্টনমেন্ট, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনৈতিক কাজ হবে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আজকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ক্ষমতায় আছে তারা যখন রাষ্ট্রের ক্ষমতা কে পদলেহন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় এটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে, যখন এই রাষ্ট্রের টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে আসবে এবং এই টাকা যখন লুটপাট করবে তখন সেই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করবে এটাই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধানকাজ এবং অন্যায় ভাবে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা ও অন্যায় ভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো তার বিরুদ্ধে যখন শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করবে এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান কাজ।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মাহমুদের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদ জাবি শাখার যুগ্মআহ্বায়ক আরিফ আদিব ও ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের কার্যকারী সদস্য রাকিবুল রনিসহ প্রমুখ।

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯ at ১৭:৩৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসএ/কেএ