আবারও অস্থির পেঁয়াজের বাজার

গত শুক্রবার ভারত প্রতি টন পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রফতানি মূল্য ৮৫০ মার্কিন ডলারের ঘোষণা দেয়ার পর দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত দুই দিনের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দুদফা কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭৮-৮০ টাকা কেজি দরে। শনিবার ছিল ৭০ টাকা। বৃহস্পতিবার বিক্রি হয় ৫০-৫৫ টাকায়। রোববার ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৭০ টাকা কেজি দরে, শনিবার বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। বৃহস্পতিবার ছিল ৪৫-৫০ টাকা।

খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতা রুবেল বলেন, শুক্রবার থেকে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম আবারও বেড়ে গেছে। বেশি দামে পেঁয়াজ আনতে হয়েছে। তাই বিক্রিও হচ্ছে বেশি দামে।

এদিকে রাজধানীর পাইকারি আড়ত ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার এক পাল্লা (পাঁচ কেজি) দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকা। শনিবার বিক্রি হয় ৩০০ টাকায়। বৃহস্পতিবার ছিল ২১৫-২২৫ টাকা। রোববার ভারতীয় পেঁয়াজের পাল্লা বিক্রি হয় ৩০০ টাকায়। শনিবার বিক্রি হয় ২৮০-২৯০ টাকায়। বৃহস্পতিবার বিক্রি হয় ২১০-২১৫ টাকায়।

অন্যদিকে ভারতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪০-৫০ রুপিতে ওঠার পর দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) শুক্রবার প্রতি টন ভারতীয় পেঁয়াজের মূল্য ৮৫০ ডলার ঠিক করে নির্দেশনা জারি করে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই মূল্য বহাল থাকারও ঘোষণা দেয়া হয়।

শ্যামবাজারের এক বিক্রেতা বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। দেশটি রফতানির সর্বনিম্ন মূল্য ৮৫০ ডলার বেঁধে দিয়েছে। আগে ছিল সর্বোচ্চ ৩০০-৩৫০ ডলার।
আরও পড়ুন:
কাশ্মীরি শিশুদের জন্য সহায়তার দাবি, মালালা ইয়ুসুফজায়ী
এক কাপড়ে সৌদি থেকে ফিরলেন ১৭৫ বাংলাদেশি

নতুন মূল্য নির্ধারণের পর থেকে স্থলবন্দরে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। একই সঙ্গে দেশি পেঁয়াজের দামও বেড়ে যায়। বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করলে পেঁয়াজের দাম কমতে থাকবে।

পেঁয়াজ কিনতে আসা আক্তার মোল্লা বলেন, কয়েক দিন পর পরই পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এতে পণ্যটি ক্রয়ে আমাদের হিমশিম খেতে হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, ভারত ছাড়াও বিকল্প কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

দেশে বর্তমানে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। এ বছর ১৯-২০ লাখ টন দেশে উৎপাদন হয়। চাহিদার বাকি অংশটা আমদানিতে মিটছে। আর দেশের আমদানি করা পেঁয়াজের বেশির ভাগই আসে ভারত থেকে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, কয়েক সপ্তাহ আগেও ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় দেশে তার প্রভাব পড়েছিল। এবারও ভারত দাম বৃদ্ধি করেছে। ফলে আবারও দেশের বাজারে পণ্যটির দাম বেড়েছে। তবে দাম বাড়লেও বিক্রেতারা যাতে যৌক্তিক দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে সেদিকে অধিদফতরের তদারকি টিম কাজ করছে।

 সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯ at ১১:১৩:১৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসজে