বৃক্ক বা কিডনির সমস্যা যে শুধু বড়দের হতে পারে, এমন নয়। মায়ের পেটে অবস্থান করা থেকেই নবজাতক আক্রান্ত হতে পারে এ রোগে। তিন-চার বছরের শিশুও আক্রান্ত হতে পারে। অল্প বয়সী শিশুরা মূলত দুই ধরনের কিডনির সমস্যায় ভোগে। একটি নেফ্রোটিক সিনড্রোম, আরেকটি অ্যাকিউট গ্লোমেরিউলো নেফ্রাইটিস।
লক্ষণ : নেফ্রোটিক সিনড্রোমে আক্রান্ত হলে প্রথমে শিশুর চোখ ফুলে যাবে। এরপর পা এবং পুরো শরীর ফুলে ওঠে। প্রস্রাবের পরিমাণ কমে আসে। এ রোগ বারবার দেখা দিতে পারে। নেফ্রাইটিস সিনড্রোম স্কুলগামী ছেলেমেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। শিশুর শরীরে খোশ-পাঁচড়া বা গলাব্যথা অসুখের ১০ থেকে ২১ দিন পর সাধারণত এ রোগ প্রকাশ পায়। স্টেপটোকক্কাই নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ এ জন্য দায়ী। এ ছাড়া কিডনির আরও কিছু সমস্যা দেখা যায়। মেয়েদের চেয়ে ছেলেরাই বেশি আক্রান্ত হয়, এমন আরও কিছু রোগ হলোÑ
পোস্টিরিওর ইউরেথ্রাল ভালব : এ সমস্যায় শুধু ছেলেশিশু আক্রান্ত হয়। এতে আক্রান্ত শিশু প্রস্রাব করার সময় কষ্ট অনুভব করে, প্রস্রাবের ধারা দুর্বল ও থেমে থেমে হয়, মাঝে মধ্যে জ্বর হতে পারে, কারও তলপেটে নাভির কাছের অংশ ফুলে যায়, শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে কিডনির বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
পেলভি-ইউরেটেরিক জাংশন অবস্ট্রাকশন : এ রোগে ছেলেমেয়ে উভয় শিশুই আক্রান্ত হয়। রোগটি জন্মগত হলেও প্রকাশ পেতে সময় লাগে। তাই যথাসময়ে রোগ নির্ণয় জরুরি।
কিডনি রোগ প্রতিরোধে করণীয় : পানি এবং পানিজাতীয় খাবার কম খাওয়ার কারণে কিডনির সমস্যা বেশি হয়। আবার দীর্ঘদিন কোমল পানীয় বা বেভারিজ পানে প্রস্রাবের অম্লত্ব কমে আসে। ফলে ইউরিন ইনফেকশনের প্রবণতা বেড়ে যায়। তাই অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে।
আমাদের দেশে এখনো অনেকে কবিরাজি চিকিৎসা ও ওষুধের ওপর নির্ভর করে থাকেন। এ ধরনের ওষুধে মার্কারির পরিমাণ থাকে বেশি। মার্কারি কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আবার শিশুরা বাগান বা মাঠে খেলতে গেলে অনেক সময় বোলতা বা মৌমাছি হুল ফুটিয়ে থাকে। পোকামাকড়ের হুলে এক ধরনের টক্সিন বা বিষ থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। শিশুদের কিডনি বা মূত্রতন্ত্রের সমস্যা প্রথম পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে সাধারণ চিকিৎসায় সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
সেপ্টেম্বর১২, ২০১৯ at ০৭:১৬:৪১(GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/ আক/ জুবা/ইআ