বিনা দোষে আড়াই মাস জেল খাটালেন দুলাভাই ও শ্যালক

ফেনসিডিল উদ্ধার মামলায় বিনা দোষে আড়াই মাস জেল খাটলেন দুলাভাই ও শ্যালক। তারা হলেন ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার সাধুপাড়া গ্রামের মো. আসাদ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার বৈদ্যারগাঁও গ্রামের মুক্তার হোসেন।

মিথ্যা মাদক মামলায় ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে আড়াই মাস জেল খাটেন তারা। অবশেষে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান এর হস্তক্ষেপে ২৭ আগস্ট মুক্তি পান তারা।

আসাদ ও মুক্তার বেড়াতে এসেছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়িতে। কুদ্দুস আসাদের ভায়রাভাই। ওইদিন দুপুরে ঝিনাইদহ বাস টার্মিনাল থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে তাদের। ফেনসিডিল উদ্ধার মামলায় দুজনকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন :
ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য টিআরএম চালুর দাবিতে মানববন্ধন
আসামির স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় তিন আসামির রিমান্ড মঞ্জুর

ঘটনার দিন জীবননগর আমের হাট থেকে ১৫০ কেজি আম কিনেছিলেন তারা। বেলা ১১টার দিকে জেআর পরিবহন বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। দুজন আমের কার্টনসহ স্থানীয় বাস স্ট্যান্ড কাউন্টারে আসেন। টিকিট কেটে দেখেন আমের কার্টন নেই।

জিজ্ঞেস করলে হেলপার জানায়, কার্টন বক্সে দেয়া হয়েছে, আপনারা বাসে উঠে পড়েন। জীবননগর থেকে ঢাকাগামী জেআর পরিবহন বাসটি (ঢাকা মেট্রো ১৪-৬৮৮৭) ছুটে চলে। এরপর ঝিনাইদহ বাস টার্মিনালে নিজস্ব কাউন্টারের সামনে থামে বাসটি।

ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এসআই মো. বদিউর রহমান, কনস্টেবল লিটন খান, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং আরাফাত বাসের দিকে ছুটে আসেন। বাসের বক্স খুলে আমের কার্টনের মালিকের খোঁজ করতে থাকেন তারা। বাসের হেলপার আসাদকে দেখিয়ে বলে, কার্টনগুলো এদের।

দুজনকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয় । জেলা গোয়েন্দা পুলিশের দফতরে চলে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ। ঝিনাইদহ থানায় এসআই মো. বদিউর রহমান মামলা করেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসাদ ও মুক্তারের কাছে থাকা কার্টনভর্তি ২১৫ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। যার মূল্য দুই লাখ পনেরো হাজার টাকা। ১৫ জুন আসাদ ও মুক্তারকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত আসামিদের ঝিনাইদহ জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গোপন সূত্রে জানা যায়, জেআর পরিবহন বাসটির ড্রাইভার ও হেলপার মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্য। চোরাকারবারিদের সঙ্গে চুক্তি মোতাবেক বাসচালক আবদুল খালেক ও হেলপার রতন মিয়া জীবননগর উপজেলার পেয়ারাতলা নামক স্থান থেকে ফেনসিডিল ভর্তি একাধিক কার্টন বক্সে তুলে নেয়। সুকৌশলে সেগুলো রেখে দেয় আম ভর্তি কার্টনগুলোর পাশে।

পুলিশ সুপারের নির্দেশে, ৭ জুলাই জীবননগর উপজেলার কাশিপুর মাঠপাড়ার মো. মানিক মিয়ার ছেলে মো. রতন মিয়া (বাস হেলপার), জীবননগর উপজেলা সড়কের, আবুল হোসেন মাস্টারের ছেলে আনোয়ারুজ্জামান ওরফে লেলিনকে আটক করা হয়।

দেশদর্পণে আরও পড়ুন :
‘গুড গর্ভানেন্স এন্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন নেপাল’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্টিত
কোটচাঁদপুর ঋষি পল্লিতে র‌্যাবের অভিযান, ২কেজি গাঁজাসহ আটক ১

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। বাসটির ড্রাইভার জীবননগর উপজেলার চোরপোতা তেঁতুলিয়া গ্রামের আবদুল খালেককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে ।

ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান খান ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. এমদাদুল হক বলেন, আসল মাদক ব্যবসায়ীদের দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ড্রাইভার আবদুল খালেককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে এ ঘটনায় ২৭ আগস্ট ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মিজানুর রহমান নিরপরাধ মো. আসাদ ও মো. মুক্তার হোসেনকে মুক্তির আদেশ দেন।

সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯ at ১৭:১৩:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/কএল/আজা