ভেজাল সারের ডিপো যশোর: ধরাছোঁয়ার বাইরে কারবারিরা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক

যশোরাঞ্চলে ভেজাল সার তৈরি ও বিপনন মারাত্মক হারে বেড়ে গেছে। আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার এক শ্রেণীর অসাধূ কর্মকর্তা ও কৃষি বিভাগে দায়িত্ব নিয়োজিত কর্মকর্তাদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে বাঁধাহীনভাবে ভেজাল সার তৈরি ও বিপনন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ চক্রের সদস্যরা দেশি-বিদেশী নামি দামি কোম্পানীর নামের প্যাকেটে ভেজাল সার ভরে বড় বড় সারের মোকামে বিক্রি করে থাকে। আর ওই সার কৃষকেরা ক্ষেতে ব্যবহার করে ভালো ফসল না পেয়ে সর্বস্ব খুইয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এতে বড় ভূমিকা রাখছে এ জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ডজ্জন দুয়েক ভেজাল সার কারখানার মালিকরা। মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট করে ফেলার মতো যত সব উপাদান তা মিশিয়ে কারখানাগুলোতে উৎপাদিত হচ্ছে ভেজাল দস্তা, টিএসপি ও এমপি সার। ফলে হুমকিতে পড়ছে কৃষিজমি ও শস্যভান্ডার।

এদিকে ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে গত চার বছরে ওই সব কারখানার কয়েকটি সিলগালা করা এবং কোনো কোনোটির নিবন্ধন নবায়নের অনুমতি দেওয়া না হলেও থেমে থাকেনি ভেজাল সার উৎপাদনের কার্যক্রম। ভেজাল দস্তাসার কারখানার মালিকেরা ছাই, পচা শেওলা, পাথরের কুচি, ডিনামাইট পাউডার পোড়া মাটি জিপসাম, হাওর অঞ্চলের শামুকের কুচি, পাথর কুচির সাথে রং দিয়ে রাতের আঁধারে ও দিনের সুবিধাজনক সময়ে নানা কৌশলে মহিলা-পুরুষ শ্রমিক দিয়ে ভেজাল সার উৎপাদন করে যাচ্ছে ওই কারখানাগুলোর কর্তৃপক্ষ।

পরে ওই সার শিল্পনগর নওয়াপাড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের সারের বড় মোকামে বাজারজাত করে সর্বোচ্চ মুল্যে কৃষকদের হাতে পৌছে দেয়।

আরও পড়ুন :
ইবিতে ছাত্রলীগের মাদক বিরোধী মিছিল ও সমাবেশ
নিজ হাতে গড়া বন্দিশালায় বন্দি হবেন আসামের শেফালী হাজং

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এ সারে রং মেশানো হয়। তারপর ভারত, চায়না কোরিয়া থেকে আমদানি করা উন্নত মানের সার বলে কৃষকের কাছে বিক্রি করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬ অনুযায়ী যিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, তিনিই সার উৎপাদন কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। নির্বাহী হাকিম ও পুলিশের সহায়তা নিয়ে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানোর দায়িত্ব তাঁরই ওপর ন্যস্ত। তবে, অজ্ঞাত কারণে, গত কয়েক বছরে উপজেলার সার কারখানাগুলোতে তেমন অভিযানও চালানো হয়নি।

কয়েকজন ভেজাল সার উৎপাদনকারীদের বক্তব্য তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা লিখলে কিছুই হয় না। কারন যারা ব্যবস্থা নিবে তারাই তাদের অর্থে লালিত। তবে, সাধারণ কৃষকদের সাথে আলোচনায় তাদের দাবি গায়ের ঘাম জমিতে ফেলে তারা চাষ করেন। কিন্তু ভেজাল ও মানহীন সার ব্যবহার করে উৎপাদন শ্যূনোর কোটায় পড়ে। তাই অবিলম্বে ভেজাল ও মানহীন সার উৎপাদন বন্ধ এবং উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কৃষি মন্ত্রী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন চেয়েছেন।

চলবে ……….

সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯ at ১৩:১১:২৭ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এএএম