গ্রামীণফোন ও রবি’র লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ

দেশের শীর্ষ দুই মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির সঙ্গে পাওনা নিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। ‘কেন লাইসেন্স বাতিল করা হবে না’ তা জানতে চেয়ে বৃহস্পতিবার এই দুই অপারেটরকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ দিয়েছে বিটিআরসি।

কমিশনের চেয়ারম্যান জহুরুল হক জানান, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০১ এর ৪৬ (২) ধারা অনুযায়ী গ্রামীণফোন ও রবিকে নোটিশ দেয়া হয়েছে। পাওনা টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের টু-জি ও থ্রি-জি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়েছে এতে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নোটিশের জবাব না পাওয়া গেলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানান তিনি। তবে বিটিআরসির এই নোটিশকে ‘অযৌক্তিক’ ও ‘অন্যায্য’ বলে দাবি করেছে গ্রামীণফোন ও রবি।

বিটিআরসির অডিট আপত্তি অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের কাছে ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। পাওনা টাকা আদায়ে কয়েক দফা চিঠি দেয়ার পরও সারা না দেয়ায় গত ৪ জুলাই দুই অপারেটরের ব্যান্ডউইথ বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছিল বিটিআরসি। গ্রাহকদের সমস্যা হওয়ায় ১৩ দিনের মাথায় সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয় সংস্থাটি। এরপর ২২ জুলাই থেকে গ্রামীণ ও রবির নতুন কোনো সেবার অনুমোদন ও অনাপত্তিপত্র দেয়া বন্ধ করে বিটিআরসি। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় অপারেটর দুটির লাইসেন্স বাতিলের জন্য নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া হাতে নেয় তারা। যা শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত রূপ নিল।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত চেষ্টা করছি। কিন্তু এরা বিষয়টিকে আমলে নিচ্ছে না। আমি যতো রকমের চেষ্টা করার করেছি। নরম সুরে বলেছি, বিনয় দেখিয়েছি, যে বিষয়টি নিষ্পতি করা হোক। কিন্তু তারা এতে গা করছে না। আমি তো রাষ্ট্রের ১৩ হাজার কোটি টাকা পানিতে ফেলে দিতে পারি না। তাই পাওনা আদায়ে আমাদের কঠোর পদক্ষেপের দিকে যেতেই হবে।

তবে বিটিআরসির দাবিকৃত টাকার অংকের সঙ্গে দুই অপারেটরেরই দ্বীমত রয়েছে বলে এর আগে জানিয়েছিলেন সংস্থার দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। গত ৭ জুলাই এক মিট দ্যা প্রেসে গ্রামীণ ফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি বলেন, এটি অডিট আপত্তির টাকা। যার সঙ্গে আমরা একমত নই। তাই সালিশ আইন ২০০১-এর অনুযায়ী তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার দাবি জানিয়েছি আমরা। গত ২৩ জুন বিটিআরসিকে এ জন্য একটি নোটিশও পাঠানো হয়েছে। তবে আইন অনুযায়ী সালিশের কোনো সুযোগ নেই বলে পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যমকে জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান।