মুঠোফোনের সূত্র ধরে খুনের রহস্য উদ্ঘাটন

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় এক চা-বিক্রেতাকে কাঠ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করার দাবি করেছে পুলিশ। উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের কুলশ্রী গ্রামের এক গৃহবধূর মুঠোফোনের সূত্র ধরে এই হ’ত্যাকাণ্ডের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এর রহস্য উদ্ঘাটন করা হলো।

এ হত্যাকাণ্ডে কুলশ্রী গ্রামের কুয়েত প্রবাসী শাহ আলম নামের এক ব্যক্তির স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার (৩৮) ও তার ছেলে ইয়াছির আরাফাত শান্তকে (১৯) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায় নিহতের মেয়ে শারমিন আক্তার বাদী হয়ে চাটখিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আজ বৃহস্পতিবার মা-ছেলেকে আদালতে তোলার পর হত্যাকাণ্ডে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তারা। নোয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শোয়েব উদ্দিন খান ও মুশফিকুল হকের আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছ।

আরও পড়ুন:
ফলদ বনজ ও ঔষধি বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন
ফুটবল খেলা কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০

আদালতের কার্যক্রম শেষে আজ দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে নোয়াখালী পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। সেখানেই এসব তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।

এসপি আলমগীর বলেন, নিহত শাহ আলমের মেয়ে শারমিনের মামলার পর আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় ইয়াছমিন ও তার ছেলে শান্তকে গ্রেপ্তার করি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত কাঠটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে এসপি বলেন, মামলা করতে এসে শারমীন আমাদের জানান, হত্যাকাণ্ডের রাতে (মঙ্গলবার) তার বাবার মোবাইলে কয়েকবার ফোন আসে। কিছুক্ষণ পর শাহ আলম ঘরের দরজা বাইর থেকে বন্ধ করে বের হয়ে যান। সকাল পর্যন্ত তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।

মামলার পর তদন্তে নেমে কুয়েত প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী ইয়াছমিন ও তাদের সন্তান শান্তের সম্পৃক্ততার সূত্র পান। পরে ইয়াছমিনের মোবাইল ফোন ট্যাপ করেন তারা। এই সূত্র ধরেই চা-বিক্রেতা শাহ আলমের হত্যাকোণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেন তারা। পরে গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ইয়াছমিনের বাবার বাড়ি তাদের গ্রেপ্তার করে।

ইয়াছমিন আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসপি আরও জানান, নিহত শাহ আলম বিভিন্ন সময় তাকে ফোন করে বিরক্ত করতেন। রাতের বেলা তার ঘরের জানালায় টোকা দিতেন। তার ছেলে শান্ত কয়েকবার মোবাইলের মাধ্যমে শাহ আলমকে শাসিয়ে ছিলেন। তারপরও চা বিক্রেতা তাকে উত্ত্যক্ত করতেন।

এসপি আলমগীর হোসেন জানান, বিরক্ত হয়ে ছেলের সঙ্গে এর একটা বিহিত করতে পরিকল্পনা করেন ইয়াছমিন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি বুধবার রাত ১টার দিকে শাহ আলমকে ঘরে ডাকেন। এর আগে থেকে শান্ত ও তার কয়েকজন বন্ধু বাড়ির পাশে ঝোপে ওঁৎ পাতেন। ইয়াছমিনের বাড়ির দিকে আসার পথে আবুল কালাম নামে আরেক ব্যক্তির দোকানের সামনে আসলে শান্ত ও তার বন্ধুরা শাহ আলমকে আটকে ফেলেন। পরে ওই দোকানের পেছনে নিয়ে তার ঘারে কাঠ দিয়ে আঘাত করেন। শাহ আলম পড়ে গেলে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায় শান্তরা।

এ হত্যাকাণ্ডে শান্তর সঙ্গে জড়িত তার বন্ধুদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত আছে বলেও জানান এসপি।

সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯ at ২০:৩৯:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/জেডবি/এএএম