দেশের ৪০ তারকা শিল্পীকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তারকারা রাজধানীর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন। হুমকি পাওয়া শিল্পীদের তালিকায় আছেন, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, সঙ্গীতশিল্পী ফাহমিদা নবী, আগুন, কণা, দিনাত জাহান মুন্নী, আঁখি আলমগীর, ইমরান, গীতিকার কবির বকুল, অভিনেত্রী সোহানা সাবাসহ অনেকে।
শিল্পীরা জানান, একটি ব্রিটিশ মোবাইলে নম্বর থেকে শিল্পীদের সবার মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে এই হুমকি দেয়া হচ্ছে। মোবাইল পাঠানো এসব বার্তায় ‘জুবাইর’ নাম উল্লেখ করা হচ্ছে।
কয়েকজন শিল্পী জানান, গত মাসে লন্ডন থেকে জুবাইর নামের এক ব্যক্তি নিজেকে প্রবাসী বাংলাদেশি বলে পরিচয় দিয়ে তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন।
ফোনে তিনি জানান যে, ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত লন্ডনে ‘বাংলাদেশ মেলা’ নামে সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন করা হবে। ৯ দিনের এই উৎসবে লন্ডনের তিনটি স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কথা বলতে জুবাইর নামের ওই ব্যক্তি গত ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন বলে শিল্পীদের জানান। ওই দিন ঢাকায় এসে ওয়েস্টিন হোটেলে তাদের সাথে কথা বলে অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবেন তিনি।
এর মধ্যে প্রায়ই ফোনে জুবাইর পরিচয়ধারী ওই ব্যক্তি বাংলাদেশে ফোন করে শিল্পীদের সাথে কথা বলেছেন। ফোনে যোগাযোগ করে ওই ব্যক্তি প্রায় ৪০ জন শিল্পীর কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টের ফটোকপিসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র সংগ্রহ করেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর ফোন করে জুবাইর নামের ওই ব্যক্তি জানান যে, তিনি ফ্লাইটে উঠেছেন। ঢাকায় ৩ সেপ্টেম্বর বিকেলের মধ্যে পৌঁছে যাবেন। সবাই যেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে গুলশানে হোটেল ওয়েস্টিনে চলে আসেন। এরপরই মোবাইলে হুমকি দিয়ে হোটেলে উপস্থিত সবাইকে বার্তা পাঠান জুবাইর নামধারী ওই ব্যক্তি।
বার্তায় জুবাইর অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের একজন অভিনেত্রী এবং ওই অভিনেত্রীর ভাই প্রতারণা করে তার কাছ থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি অনেক শিল্পীর কাছে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু সবাই এড়িয়ে গেছেন। তিন দিনের মধ্যে ওই দুজনের কাছ থেকে সব টাকা ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করতে বলেন তিনি। তা না হলে কোনো শিল্পী যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন, সেই ব্যবস্থা করবেন বলে হুমকি দেন ওই জুবাইর।
শিল্পীদের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় জিডি করা হয়। তবে জিডির পরও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন ওই ব্যক্তি। সবশেষ গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় টাকা ফেরতের দাবি করে বার্তা পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, টাকা পাওয়া গেলে কারও কোনো ক্ষতি হবে না। আর না পাওয়া গেলে পাসপোর্টের কপি দিয়ে কী করা যায়, সেটি টের পাওয়া যাবে। এ ছাড়া আগামী সাত দিনের মধ্যে কেউ না কেউ শেষ হবে বলে প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়া হয়। এ ব্যাপারে গুলশান থানার ওসি এস এম কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে জিডি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯ at ১৭:১৪:২৭(GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/ আক/আজা
