খাদ্য, আশ্রয় ও ওষুধ দরকার বাহামাতে ৭০ হাজার লোকের

ক্যারিবীয় অঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী হারিকেন ডোরিয়ানের আঘাতে বিধ্বস্ত বাহামা দ্বীপপুঞ্জের ৭০ হাজার লোকের জরুরি মানবিক ত্রাণ সহায়তা দরকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

দ্বীপপুঞ্জটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী এ হারিকেনের তাণ্ডবে ২০ জন নিহত হয়েছেন বলে বুধবার বাহামাসের প্রধানমন্ত্রী হুবার্ট মিনিস জানিয়েছেন।আমাদের ধারণা এই সংখ্যা আরও বাড়বে, এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমনটি বলেছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

বাহামাসের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, আবাকো দ্বীপে ১৭ জন ও গ্রান্ড বাহামা দ্বীপে তিন জন নিহত হয়েছেন।

সাফির-সিম্পসন স্কেলে সর্বোচ্চ মাত্রা ক্যাটাগরি পাঁচ হারিকেন রূপে ১ সেপ্টেম্বর বাহামাসে আঘাত হানে ডোরিয়ান। ঘণ্টায় একটানা সর্বোচ্চ ২৯৮ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগর থেকে স্থলে উঠে আসে হারিকেনটি। এরপর দুই দিন ধরে দ্বীপপুঞ্জটির উত্তরাংশের আবাকো দ্বীপ ও গ্রান্ড বাহামা দ্বীপে তাণ্ডব চালায়।

আরও পড়ুন :
পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
পার্বত্য চট্টগ্রামে অশান্তির কারণ ও সমাধানের পথ

এতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ও কতোটা মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হচ্ছে।

বিমান থেকে ধারণ করা ভিডিওতে আবাকো দ্বীপে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান হয়েছে। দ্বীপটির বন্দর, দোকানপাট ও কর্মস্থল, একটি হাসপাতাল ও বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এরমধ্যে কোনো কোনোটি খণ্ড খণ্ড হয়ে উড়ে গেছে।

জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটরি মার্ক লোকক জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ হাজার লোকের খাদ্য, আশ্রয় ও ওষুধ সহায়তা দরকার।

তিনি বলেন, “কয়েকটি এলাকা সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হওয়ায় অথবা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় অথবা বন্যায় ভেসে যাওয়ায় উদ্বেগ রয়েই যাচ্ছে। যারা সেখানে বাস করতো তারা এখন কোথায় এবং কীভাবে সেখানে পৌঁছানো যাবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।”

দ্বীপপুঞ্জটির প্রায় ১৩ হাজার বাড়ি সম্ভবত ধ্বংস হয়েছে অথবা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে।

প্রায় চার লাখ বাসিন্দার এই দ্বীপপুঞ্জটির বহু লোক নিখোঁজ রয়েছেন। বহু লোক ফেইসবুকের মাধ্যমে তাদের নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুজে ফিরছেন।

গ্রান্ড বাহামায় ক্ষয়ক্ষতি জরিপরত রয়টার্সের এক ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, ফ্রিপোর্ট বিমানবন্দরের অনেকগুলো হ্যাঙ্গার ও বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে হয়েছে।

বাহামাসে আঘাত হানার আগে ডোরিয়ানের তাণ্ডবে পুয়ের্তো রিকোতেও একজন নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় সময় বুধবার রাত ৮টার সময় ডোরিয়ান যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটন থেকে প্রায় ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল, এ সময় এটি দুই মাত্রার হারিকেনের শক্তি নিয়ে এগোচ্ছিল বলে জানিয়েছে মিয়ামিভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) ।

অপেক্ষাকৃত উষ্ণ জলভাগের ওপর দিয়ে এগোতে থাকায় শক্তি সঞ্চয় করে এটি ফের চার মাত্রার হারিকেনের রূপ নিতে পারে বলে এনএইচসির আবহাওয়াবিদ ল্যান্স উড জানিয়েছেন।

হারিকেনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলাইনা ও নর্থ ক্যারোলাইনা থেকে ভার্জিনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় হ্যাম্পটন রোডস পর্যন্ত সতর্কতা জারি করেছে এনএইচসি। ডোরিয়ানের কারণে কর্তৃপক্ষ ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও সাউথ ক্যারোলাইনার ২২ লাখেরও বেশি লোককে এলাকা ছেড়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

ফ্লোরিডা, ডোরিয়ানের সরাসরি আঘাত থেকে রেহাই পেয়েছে।

সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯ at ১২:৩৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/দৈজ/এএএম