সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আমিনুল ইসলামের কর্মময় জীবনের পরিধি

অবহেলিত জনপদের নাম থেকে কুড়িগ্রাম শব্দটি ক্রমান্বয়ে ধূসর হয়ে যাচ্ছে। নদীভাঙ্গন, বন্যা, খরা অথবা প্রচন্ড শীত কবলিত কুড়িগ্রামের চিত্র এখন কিছুটা ভিন্ন। মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে শিখেছে। কুড়িগ্রামের মানুষ ভাগ্য বদলে উদ্যমী হচ্ছে।

নদীভাঙ্গন, বন্যা, খরা অথবা প্রচন্ড শীতের সঙ্গে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা ও চিকিৎসার বিষয়টি খুব গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট। বিগত প্রায় ২ বছর যাবৎ কুড়িগ্রামে স্বাস্থ্য খাতে দৃশ্যমান কিছু উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়েছে। বিগত ঈদুল আজহার দিনে একটি দৃশ্য দেখা গেল। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছাঃ সুলতানা পারভীনসহ কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ এ এস এম আমিনুল ইসলাম হাসপাতাল পরিদর্শনে এলেন।

একেতো কুড়িগ্রামে নজিরবিহীন বন্যা পরবর্তীতে পানিবাহিত রোগের চরম আকার ধারণ করেছে, তারপরে ঈদ উপলক্ষে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম ফেরত অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কুড়িগ্রামের হাসপাতাল গুলোতে ভর্তি হয়েছে। কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন আগেই প্রিভেন্টিভ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন বিধায় কুড়িগ্রামে প্রবল বন্যা ও ডেঙ্গুর প্রকোপে একজনও রোগাক্রান্ত হয়ে প্রাণহানী ঘটেনি।

আরও পড়ুন :
শারীরিক প্রতিবন্ধী ফুলতি বালা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে চায়
৯৬ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক

ঈদুল আজহার রাতে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের সঙ্গে হাসপাতাল পরিদর্শনেকালে এই প্রতিবেদক অনেক রোগীর সঙ্গে কথা বলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। বাস্তবিক অর্থে চিকিৎসকের স্বল্পতা থাকলেও রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবার কোন ব্যত্যয় ঘটেনি।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আমিনুল ইসলাম কুড়িগ্রামেরই একজন মানুষ। সুদীর্ঘকাল ব্যাপী তিনি কুড়িগ্রামের মানুষকে সরকারি দ্বায়-দায়িত্ব সহ প্রাইভেট প্রাকটিসের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। প্রায় ২ বছরের অধিক সময় যাবৎ তিনি কুড়িগ্রাম জেলার সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর চাকুরীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জনের দায়িত্ব পালনের আগে তিনি কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কমর্রত ছিলেন। কুড়িগ্রামের মানুষ জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জনকে তাৎক্ষণিভাবে যোগাযোগ করতে পারতেন। এই প্রতিবেদক কুড়িগ্রাম জেলার স্বাস্থ্য সেবা ও সরকারী চিকিৎসা ব্যবস্থার হাল হকিকত জানার জন্যে সিভিল সার্জন ডাঃ এ এস এম আমিনুল ইসলাম এর সঙ্গে কথা বলেন।

সমগ্র কুড়িগ্রাম জেলায় প্রায় ৬৫% চিকিৎসকের স্বল্পতার মাঝে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে জেলা সদর, উপজেলা, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালনা করে আসছেন বলে সিভিল সার্জন ডাঃ এ এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, সাধারণ জনগণের মাঝে কোথাও বড় ধরণের কোন অভিযোগ নেই। সীমিত সম্পদ ও সীমাবদ্ধতার মাঝেও সরকারি চিকিৎসকদের মাঝে তিনি সফল টিমওয়ার্ক করতে সক্ষম হয়েছেন।

সিভিল সার্জন ডাঃ এ এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, ইউনিসেফের ”ইমেন” প্রকল্পে ঘানা, তানজানিয়া ও বাংলাদেশে কুড়িগ্রাম জেলা প্রথম স্থান ও মডেল স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটা আমাদের বড় সাফল্য। সেই সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার সকল হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জামাদির কোন অভাব নেই, যন্ত্রপাতি সব সচল। এবারের বন্যা ও ডেঙ্গুতে আমাদের নজরদারী ছিল প্রখর। আল্লাহর রহমতে বন্যার পানিবাহিত রোগ ও ডেঙ্গুতে এই জেলায় কোন প্রাণহানি ঘটেনি।

তিনি আরও জানান, তার আমলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার জন্যে দুটি এম্বুলেন্স প্রাপ্ত হই। কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন একজন সৎ, দক্ষ, পরিশ্রমী, আন্তরিক অতঃপর কুড়িগ্রামের মানুষের সম্পূর্ণ অনুভূতি যেহেতু সার্বিকভাবে ওয়াকিবহাল সে জন্যে তার চাকুরীর বয়স সীমা অতিক্রান্ত হলেও যেন এই কুড়িগ্রাম জেলায় তার চৌকষ চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত না হয়, সে জন্যে অনেকেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের মাধ্যমে তাঁর কর্ম পরিধি বৃদ্ধির আবশ্যকতা অনুভব করছে।

সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৯ at ১০:৪৮:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এজিলা/এএএম