ঝালমুড়ি বিক্রি করে মেয়ের হার্ট অপারেশনের  যুদ্ধে নেমেছে এক হতদরিদ্র পিতা

সকালে এ্যসেম্বলির সময় স্কুলের শিক্ষার্থীরা যখন একসঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত গাচ্ছিল, তখন শিশু মরিয়ম পিতার কোলে চড়ে সহপাটী শিক্ষার্থীদের সাথে মুখ মিলাচ্ছিল। প্রতিদিন স্কুলে আসার বায়না মেটাতে তাই পিতা কাজ ফেলে কিছু সময় স্কুলে আনে মরিয়মকে। সে সহপাটীদের সাথে খেলতে চাই, পড়তে চাই। কিন্তু গুরুতর অসুস্থ হওয়ার কারণে স্কুলে আসতে পারে না। হার্টে ছিদ্র থাকায় শ্বাস কষ্ট হয়। শরীরের কোন গ্রোথ নেই। এভাবেই প্রায় ৭ বছর শিশু মরিয়মকে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা পিতা রবিউল ইসলাম।
অর্থের অভাবে অপারেশন করাতে পারেনি। ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেনীর ছাত্রী মরিয়ম। আরাপপুর বাসষ্ট্যান্ডের চাঁনপাড়ায় তাদের বাড়ি। পিতা রবিউল ইসলাম জানান, ৪ মাস বয়স থেকে মরিয়ম হৃদরোগে ভুগছে। তার হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ার পর সহায় সম্বল বিক্রি করে এই ৭ বছর চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখন মরিয়মের বয়স ৭ বছর ৫ মাস। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতে পরীক্ষা নিরীক্ষা, ওষুধ এবং যাতায়াত বাবদ খরচ হয়ে গেছে ৫ লাখ টাকা। এখন মেয়েটির অপারেশনের জন্য বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে সাহায্য তুলে বেড়াচ্ছেন পিতা রবিউল।
সর্বশেষ ভারতের রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কার্ডিয়াক সাইন্স হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সুকান্ত কুমার বেহারা গত ২৪ আগষ্ট পরীক্ষা নিরীক্ষার পর অপারেশনের কথা বলেছেন। সেখানে ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার একটি হিসাব ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ এই অর্থ মরিয়মের পিতা রবিউল ইসলামের নেই। সামান্য ঝালমুড়ি বিক্রি করে তার সংসারাই চলে না। আরাপপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিলুফার ইয়াসমীন জানান, প্রচন্ড মেধা আর ইচ্ছা শক্তি আছে মরিয়মের। কিন্তু রোগের কাছে হেরে যেতে বসেছে মরিয়ম। তিনি বলেন, সাধ্যমতো আমরা স্কুল থেকে সাহায্য তুলে মরিয়মকে চিকিৎসা সহায়তা করে আসছি।
তার পিতার আর কিছুই নেই। তিনিও বিভিন্ন ব্যক্তি আর প্রতিষ্ঠানের কাছে আর্থিক সহায়তা চাচ্ছেন মেয়ের হার্ট অপারেশনের জন্য। সমাজের দানশীল ও বিত্তবানদের মধ্যে কেও মরিয়মকে আর্থিক সহায়তা করতে চাইলে তার পিতা মোঃ রবিউল ইসলামের ০১৯২২৮১৬৬১৪ (বিকাশ) এই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯ at ১৯:৩৫:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/কেএল/কেএ