প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের রূপকার, এলজিইডির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান প্রকৌশলী, সা‌বেক স‌চিব, মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম সিদ্দিকের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে আধুনিক দেশ গড়ার অন্যতম এই স্থপতি একাধিক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পিডিবির চেয়্যারম্যানসহ ক‌য়েক‌টি সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্র‌তি‌ষ্ঠিত করা ছিল তার সবচেয়ে বড় কীর্তি। কুষ্টিয়ার কৃতিসন্তান কামরুল ইসলাম সিদ্দিক এলজিইডিতে যে বীজ বপন করেছিলেন, তার ওপর ভিত্তি করেই দেশে আজ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে।

নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য যে হাউজিং প্রকল্প সেটি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকেরই অবদান। জীবদ্দশায় তিনি কখনোই অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি। এলজিইডি, প্রাইভেটাইজেশন, আরবান ট্রান্সপোর্ট, পিডিবিসহ সবখানে তিনি মেধার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।

আরও পড়ুন :
পঙ্কজ দেবনাথের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন নড়াইল স্বেচ্ছাসেবকলীগ
চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের বিরুদ্ধে উৎকোচ নেয়ার সত্যতা মিলেছে

আজকের পূর্বাচলেও বরেণ্য এই প্রকৌশলীর বিশেষ অবদান রয়েছে। কামরুল ইসলাম সিদ্দিক ১৯৪৫ সালের ২০ জুলাই কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এখান থেকে কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৯৬৬ সালে বুয়েট থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন।

তিনি ১৯৬৭ সালে কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর জীবন গড়ার স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর দেশগড়ার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন নিবেদিতপ্রাণ এই কর্মবীর।

১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্যের শেফিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবান অ্যান্ড রিজিওনাল প্লানিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। বিশ্বের উন্নত দেশ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার মহাপরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু মৃত্যুর কাছে হেরে যাওয়ায় তার এমন আরো অনেক পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি।

দেশের প্রতি অসম্ভব ভালবাসার জন্য আমৃত্যু সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে গেছেন প্রচার বিমুখ এই গুণী প্রকৌশলী। এলজিইডিতে নিরলস পরিশ্রমের জন্য তিনি হয়ে ওঠেন অবকাঠামো উন্নয়নের প্রবাদপুরুষ।

২০০৫ সালে প্রায় চার দশকের কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। বরেণ্য প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম সিদ্দিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরুপ অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে হার্টঅ্যাটাক করে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৯ at ১৩:০৯:৩০ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এসআরএস/এএএম