সদর হাসপাতাল সূত্র বলছে গত ২৪ আগষ্ট থেকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা ভর্তি হতে শুরু করে। প্রতিদিনই শিশু ওয়ার্ডে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়তেই আছে। এদিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর বেড সংখ্যা রয়েছে মাত্র ১৩ টি। কিন্তু বেডের তুলনায় সাত গুন রোগী বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে। রোববার দুপুর পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তি ছিল ৯৬ জন। বেড না পেয়ে রোগীর স্বজনরা শিশুদের নিয়ে ওয়ার্ড ও পাশের গাইনি ওয়ার্ডের ফ্লোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হঠাৎ করে নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্সরা।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নীলমনিগঞ্জের রিতা খাতুন বলেন তার মেয়ে গত সাতদিন যাবৎ নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পুরোপুরি সুস্থ্য হতে চিকিৎসকরা আরো কদিন হাসপাতালে থাকতে বলেছেন। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রায়েশার দাদী মর্জিনা বলেন তার নাতনী হঠাৎ করেই বাড়িতে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে হাসপাতালের ডাক্তাররা আমাদের বলে রায়েশা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হবার পর বেড না পেয়ে বারান্দায় কোনরকম পাটি পেড়ে নাতনীর চিকিৎসা নিচ্ছি। আলুকদিয়ার ইউনিয়নের আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, তার ভাইয়ের ছেলেকে নিয়ে তিনি গত কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও আজও তারা বেড পায়নি। ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা এতো যে তীব্র গরমে শিশুরা আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে।
সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন হঠাৎ করেই কয়েকদিন আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ায় শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়া রোগ ছড়িয়েছে। এই সময় আক্রান্ত শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। মায়ের বুকের দুধ পান বন্ধ করা যাবে না। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামীম কবির বলেন, বেশ কিছুদিন চুয়াডাঙ্গায় কোনো বৃষ্টি নেই। ভ্যাপসা গরম পড়ছে। কিছুদিন আগে এ গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগের প্রাদূর্ভাব দেখা দিয়েছিল। গরমের কারণে শিশুরা অতিরিক্ত ঘেমে যাচ্ছে। তারপর তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এখন শিশুর জন্য আলাদা যত্ন নেওয়া দরকার। হালকা পানি নরম কাপড়ে নিয়ে শিশুর শরীরের ঘাম মুছে দিতে হবে। যেসব মা তার শিশুর যত্ন নিতে পারছেন না তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। সদর হাসপাতালের হাসপাতালে লোকবলের অভাব আছে। এর মধ্যেই আমরা শিশুদের চিকিৎসা দিচ্ছি।
সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৯ at ১৯:২৯:৩৮ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/টিআর/কেএ