হাসপাতালের ক্ষেত্রে বলতে গিয়ে সাংবাদিক আব্দুল আলীম বলেন, গত ১৭ ই জুলাই আমার পিতার প্রেসার বাড়তে থাকে এতে একসময় এক হাত ও এক পা পড়ে যাওয়ার মতো হচ্ছে। কিন্তু কথা বলা, সেন্স থাকা সবই ঠিক ছিলো। এতদ সত্ত্বেও আসা-ভরসা নিয়ে দৌড়িয়ে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কোনোই প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার করে। দেরি হয়ে যায় বাবার চিকিৎসা ব্যবস্থা। ফলে প্রেসার অতিরিক্ত বেড়ে পূর্ণ ব্রেন স্টোক হয়ে যায়। দুই দিন যশোর-ঢাকা করেও হারালেন পিতাকে। এমনভাবে ওনেককেই প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়েই রেফার করছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে জ্বালা তো একদিকে না। গতকাল শুক্রবার হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিনের শুভ উদ্বোধন হলেও রয়ে যায় এক্সেরে ও ইসিজির অভাব।
উল্লেখ্য যশোরের চৌগাছা সরকারি হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ দিন নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এম ও) ডাঃ নাহিদ সিরাজ বলেন, দীর্ঘ প্রায় দুই মাস যাবৎ এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। মেশিনটি মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আমরা উদ্ধোর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি জানিয়েছি। একটি নতুন মেশিন না দেওয়া পর্যন্ত এক্স-রে বিভাগটি বন্ধ থাকবে। এ দিকে স্বাস্থ্য সেবাই দেশের মডেল হাসপাতালটির একমাত্র এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় রোগী-সাধারণ দারুণ ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পরপর ১৩ বার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সেটির এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় পুরো এক্স-রে বিভাগটি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ভূক্তভোগী উপজেলার আড়ারদহ গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন জানান আমার মা হাসিনা বেগম (৩৭) হঠাৎ করে বাড়ীতে পড়ে গিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ভ্যানযোগে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। সেখানকার চিকিৎসক আমার মায়ের পায়ের একটি এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। মাকে নিয়ে এক্স-রে বিভাগে গিয়ে জানতে পারলাম এ বিভাগটি বন্ধ রয়েছ্। বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, মেশিনটি কয়েক মাস যাবৎ নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। পরে আমি এদিক ওদিক ছুটাছুটি করে একটি প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে মাকে এক্স-রে করায়। এমনি ভাবে প্রতি দিন জরুরী রোগীরা দারুণ ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা জানান এক্স-রে মেশিনটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যশোর সিভিলসার্জনের মাধ্যমে লিখিত আবেদন প্রেরণ করেছি। আমি আশা করছি কয়েক দিনের মধ্যে তা মেরামত করা হবে। আজও কোন ফলাফল আসেনি। রোগীদের ভোগান্তি রোয়েই যাচ্ছে। নতুন করে ভোগান্তির পার্সেন্টেন্স বেড়ে গেছে ইসিজি মেশিনের অকেজোতায়। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় দেখা যাচ্ছে হাসপাতালটি একটি বস্ত্রের দোকান এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দোকানে দাড় করিয়ে রাখা পুতুলের মতো দাড়িয়ে থাকছে। সব মিলে সরকারী হাসাপাতালটি শুধু বেতনভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস হিসাবে চলছে। চিকিৎসার ক্ষেত্র হিসাবে কাজ করছে না।
দেশদর্পণ/আহা/আক/এম/কেএ