সুবিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ধর্ষিতার মা

প্রতিবন্ধী ধর্ষনের প্রতিবাদ করায় ধর্ষকের হুমকি-ধামকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ধর্ষিতার পরিবার। এমটাই অভিযোগ উছেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার খোকশাবাড়ীতে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বিচারের দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও কোন সুরাহা পাচ্ছেনা। বরং ধর্ষক বাবলু ও তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে ভয়ভিতি প্রদর্শন করছেন। তাদের অত্যাচারে ওই পরিবারটি বাড়ী ছাড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এতে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ঘটনাটি বিভিন্ন অন-লাইন ও প্রিন্টন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে শুরু হয়েছে ধর্ষকের দৌড়ঝাপ। মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরে ওই এলাকায় শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। চায়ের দোকানে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কিন্তু ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলছে না বা প্রতিবাদও করছেনা।
অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বাবলু খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের ৯নং ব্লকের সভাপতি ও সাবেক সেনা সদস্য। ধর্ষিতার মা আসমা বেগম বলেন, আমার প্রতিবন্ধী শিশুর সাথে ধর্ষণের ঘটনা শুনার পর থেকে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। ওই সময় স্থানীয়  মাতবর রহিম মেম্বার, আব্দুল, দুলাল, আব্দুস ছালাম, লাল চাঁদ আমার উপর চাপ সৃষ্টি করে ঘটনাটি আপোষ করার জন্য। আমাকে মামলা করতেও দেয়নি। পরে বিষয়টি সাংবাদিকরা শুনে রিপোর্ট করার পর থেকে আবারো অত্যাচার শুরু করেছে। এখন আমি বাড়ীতেও থাকতে পারব কিনা ? আমি গরিব মানুষ, বাসা বাড়ীতে কাজ করে খাই এই মেয়ের এখন কি হবে। আমি আমার মেয়ের বিচার চাই।
গত দুই মাস আগে সদর উপজেলা খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের ৯নং ব্লকের বাসিন্দা মো. শুকুর আলীর ৫ম শ্রেণীতে পড়–য়া প্রতিবন্ধী শিশু সন্ধার দিকে দোকানে বিস্কুল কিনতে যায়। পাশেই দাড়িয়ে থাকা বাবলু মেয়েটিকে ফুসলিয়ে তার বাড়ীতে নিয়ে ধর্ষন করে। এবং মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। কিছু দিন পর মেয়েটি আশপাশের লোকজনকে বললে শুরু হয় নানা গুঞ্জন। কিন্তু বাবলু প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে পারেনি। ঘটনাটি জানাজানি হলে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শুরু হয় শিশুর পিতা-মাতার ওপর বিভিন্ন ধরনের চাপসহ হুমকি। পরে সাংবাদিকদের দেখে সবাই মুখ খুলতে শুরু করেন। পরে ঘটনার সত্যতা এক এক করে বেড়িয়ে আসে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হেলাল শেখ বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ওই মেয়ে ও তার মা আমার কাছেও এসেছিল। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি। আমিও প্রতিবন্ধী ধর্ষনের সুবিচার চাই। তবে এলাকার মাতবররা বিচার শালিশ করে এটা মিমাংশা করে দিবে বলে তিনি জানান।
অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন বাবলু হুমকি-ধামকি ও ধর্ষনের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই মেয়েটি নাতনী হিসাবে আদর সোহাগ করি। এবং প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে মাঝে মাঝে দোকান থেকে এটা ওটা কিনেও দেই। কিন্তু তাকে আমি ধর্ষন করিনি। এটা নিয়ে আমার সাথে শত্রুতা করা হচ্ছে বলে জানান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাউদ জানান, খোকশাবাড়ী ইউনিয়নে ধর্ষনের ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আগস্ট ৩০, ২০১৯ at ১৮:৫৭:১৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এআার/কেএ