ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বদলে যাচ্ছে মানচিত্র

উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বদলে যাচ্ছে মানচিত্র। প্রতিদিনের ভাঙনে বসতভিটেসহ আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষজন। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৩টি মসজিদ, ১টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ ১টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ২ শতাধিক বাড়ি-ঘরসহ প্রায় কয়েক‘শ একর আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন পরিবার ও গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন পার্শ্ববর্তী এলাকায়। ভাঙন অব্যাহত থাকলেও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এলাকাবাসীর আশংকা বাঁধ ভেঙ্গে গেলে উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে প্লাবিত হয়ে পড়বে।

উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নয়াডারা, কামারটারী, পালের ভিটা, হাতিয়া ভবেশ গ্রামসহ ভাঙন কবলিত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন তাদের বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এ সময় আবুল কাশেম (৬০) এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘সউগ গেলোরে বাবা, এ্যালা হামরা কটে যে থাকমো আল্লায় জানে’। রাক্ষসী ব্রহ্মপুত্র নদের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে বিষন্ন অশ্রুসজল চোখে বলেন, নদের ওইখানে বাপ-দাদার কবর ছিল, সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। নয়াদাড়া গ্রামের আব্দুল হাকিম (৪৫) বলেন, ৪ একর ধানি জমি ছিল, এখন সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। রাস্তা কিংবা অন্যের জায়গায় আশ্রয় নিয়ে বাকি জীবনটা কাটাতে হবে। এছাড়া সৈয়দ আলী (৫৫) মেহের আলী (৬০) নুরুজ্জামানসহ অনেকেই একই কথা জানান।

আরও পড়ুন:
ইউনাইটেড স্টেট স্পেস কমান্ড’ গঠন করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়

এদিকে, তিস্তা নদীর ভাঙনে গত এক মাসের ব্যবধানে উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের চর কর্পূরা, রামনিয়াসা গ্রামের শতাধিক এবং বজরা ইউনিয়নের সাতালস্কর পশ্চিম বজরা গ্রামের ৪০টি বাড়ি-ঘর ও আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে।

হাতিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে সাব বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এখন সেটিও নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। এভাবে নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে মূল বাঁধসহ ইউপি ভবন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো রক্ষা করা সম্ভব হবে না। কুড়িগ্রাম পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

আগস্ট ৩০, ২০১৯ at ১৬:২০:১৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এজিএল/কেএ