অধুমপায়ী যুবকদের ধুমপানে আসক্ত করতে চলছে সিগারেটের প্রচারনা

লিটন কুমার দাস। পেশায় সেলুন কর্মচারী। অখ্যাত এক সিগারেট কোম্পানীর প্রতিনিধি এসে মোবাইল নং সংগ্রহ করলো। কিছু আলাপচারিতার ফাঁকে ব্যাগ থেকে দুই প্যাকেট সিগারেট দিয়ে বললো, আমাদের কোম্পানীর বস ফোন করলে বলবেন আমি ধুমপায়ী এবয় আপনাদের কোম্পানীর সিগারেট পান করি।

এ ভাবেই চলছে খ্যাত আর অখ্যাত সিগারেট কোম্পানীর প্রচারণা। দীর্ঘদিন ধরেই ঝিনাইদহের হাটে বাজারে আইন অমান্য করে কৌশলে বিজ্ঞাপন ও প্রচরণা চালাচ্ছে সিগারেট কোম্পানীগুলো। সিগারেট বা তামাকজাত পণ্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ হলেও থেমে নেই প্রচারণা। ভিন্ন কৌশলে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

বাহারী এসব প্রচারণার মাধ্যমে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে ধূমপানে আগ্রহী করে তুলছে। ঝিনাইদহ শহরের পায়রাচত্বর, পুরাতন ডিসি অফিস চত্বর, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যাড, আরাপপুর মোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিগারেট কোম্পানিগুলো খুচরা বিক্রেতাদের স্টিকার, লিফলেট, আকর্ষণীয় লাইটার, টি-শার্টসহ বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা এখানে বেতন ভুক্ত কর্মচারী।

সেই হিসেবে আমরা শহর থেকে প্রত্যান্ত অঞ্চলে কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, মার্কেটে সিগারেটের চাহিদা বাড়ানোর জন্য অনেক কৌশল নিতে হয়। কোম্পানির মাসিক টার্গেট পুরণ করতে হয়। চলতি বাজেটে সিগারেট কোম্পানীগুলোর উপর কর বাড়িয়েছে সরকার। কিন্তু সিগারেট কোম্পানীগুলো কৌশলে নতুন নতুন মোড়কে সিগারটে বাজারজাত করছে। আর দাম যেন ধুমপায়ীদের হাতের নাগালে থাকে এজন্য বিভিন্ন দোকানে সিগারেটের দাম সম্বলিত বিভিন্ন পোষ্টার টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। প্রচারণা কৌশল হিসেবে ঝিনাইদহ শহরের প্রায় সব এলাকায় দেখা গেছে, খুচরা সিগারেট বিক্রেতারা সুদৃশ্য শোকেজে নিয়ে সিগারেট বিক্রি করছে।

আরও পড়ুন:
গোদাগাড়ীর শীর্ষ হেরোইন ব্যবসায়ী গোপনে বিদ্যালয়ের সভাপতি!
পুলিশের উপর হামলা অস্ত্রসহ আটক ৩ যুবক

এসকল দামি ও সুদৃশ্য শোকেজগুলো কোম্পানির কাছ থেকে বিনামূল্যে পেয়েছে। এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)’র পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘এ ধরনের প্রচারণা আইনবিরোধী। আইনে বলা আছে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ ধারা ৫ এর ‘ক’ উপধারায় বলা আছে, ‘প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায়, বাংলাদেশে প্রকাশিত কোনও বই, লিফলেট, হ্যান্ডবিল, পোস্টার, ছাপানো কাগজ, বিলবোর্ড বা সাইনবোর্ডে বা অন্য কোনোভাবে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করবেন না, বা করাবেন না।’

আইন অমান্য করলে শাস্তি হিসেবে আইনের ধারা ৫ এর ৪ এ বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তি এ ধারার বিধান লঙ্ঘন করলে, তিনি অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা জেলার বিভিন্নস্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবো।

আগস্ট ৩০, ২০১৯ at ২২:০৮:১৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/কেএল/কেএ