পদ্মাপাড়ে গড়ে উঠছে কারাপ্রশিক্ষণ একাডেমী

দেশের মধ্যে একমাত্র কারাপ্রশিক্ষণ একাডেমী গড়ে উঠছে রাজশাহী নগরীর পদ্মা পাড়ে। রাজশাহীতে এটি হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান। রাজশাহীর সারদায় গড়ে উঠা বাংলাদেশের একমাত্র পুলিশ একাডেমীর পরে রাজশাহীতে এই প্রথম একমাত্র কারা প্রশিক্ষণ একাডেমীও গড়ে উঠছে। রাজশাহী নগরীর শিপাইপাড়া ও শ্রীরামপুর এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার চত্তরে এই একাডেমী গড়ে উঠছে। এরই মধ্যে প্রায় ৪০ ভাগ কাজও শেষ হয়েছে।

রাজশাহী গণপূর্ত দপ্তর সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজশাহীতে বাংলাদেশ কারাপ্রশিক্ষণ একাডেমীটি গড়ে তোলা হচ্ছে। এখানে প্রায় ৫০০ কারারক্ষী একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন এমন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠছে প্রতিষ্ঠানটি। সেই লক্ষ্যে গত বছরের এপ্রিলে এই প্রশিক্ষণ একাডেমীর কাজ শুরু হয়। যার প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয় ৭৩ কোটি টাকা। তবে পরবির্তিতে প্রশিক্ষণ একাডেমীর আরো আধুনিকায়নের জন্য প্রকল্প ব্যয় নতুন করে বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই লক্ষ্যে প্রকল্প কিছু পরিবর্তন করে পুনরায় মন্ত্রণালয়ে অনুমতির জন্য পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদন পেলে প্রকল্প ব্যয় গিয়ে ৮৫ থেকে ৯০ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকতে পারে।
সূত্র মতে, এই প্রশিক্ষণ একাডেমীতে থাকবে একটি একাডেমীক কাম প্রশাসন ভবন, কমান্ডেন্ট আবাসিক ভবন, অফিসার্স মেস, পুরুষ ও নারী কারারক্ষীদের জন্য আলাদা ব্যারাক, স্টাফ কোয়ার্টার, মসিজ, প্যারেড গ্রাউন্ডসহ গোটা প্রশিক্ষণ একাডেমীটি প্রাচীরে ঘেরা থাকবে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহীর শ্রীরামপুর এলাকায় একেবারে পদ্মার তীর ঘেঁষেই গড়ে উঠছে কারাপ্রশিক্ষণ একাডেমীর বিভিন্ন স্থাপনা। শহররক্ষা বাঁধের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তার দক্ষিণ পাশে গড়ে উঠছে এই প্রশিক্ষণ একাডেমীটি। এর জন্য পুরো এলাকা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা হচ্ছে। পাশাপাশি গড়ে উঠছে ৫ তলা থেকে শুরু করে নানা উচ্চতার ভবন।

জানতে চাইলে রাজশাহী গণপূর্ত দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ রানা বলেন, রাজশাহীতে কারা প্রশিক্ষণ একাডেমী কারাপ্রশিক্ষণ একাডেমীর জায়গা নির্ধারণ নিয়ে নানা জটিলতা তৈরী হয়। সেই সমস্যা সমাধান করে কারা চত্তরের ভিতরেই দেশের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে রাজশাহীতে। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই একাডেমীর কাজও শেষ হবে।

প্রকৌশলী মাসুদ রানা আরো বলেন, প্রকল্প বৃদ্ধির কারণে সময় বাড়তে পারে। যদিও ২০২০ সালের জুনের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে কাজটি। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যেই প্রায় ৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৬০ ভাগ কাজও শেষ হবে ওই সমেয়র মধ্যে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প বৃদ্ধির অনুমোদন পেলে কিছুটা সময়ও বৃদ্ধি পাবে। তার পরেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজটি শেষ হবে বলেও আশা করা যায়।

আরও পড়ুন:
পুলিশের উপর হামলা অস্ত্রসহ আটক ৩ যুবক
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তারুণ্যের উদ্যোগে চৌকি এবং ফ্যান বিতরণ

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্বাবধায়ক হালিমা খাতুন বলেন, এই কারাপ্রশিক্ষণ একাডেমীটি গড়ে তোলা হলে এখানে প্রায় ৫০০ প্রশিক্ষণার্থী একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। প্রশিক্ষণের বর্তমানের চেয়ে একাডেমী গড়ে উঠলে আরো মাণ বৃদ্ধি পাবে। যুগোপযোগী পদ্ধতিতে কারারক্ষীদের এই একাডেমী প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা হবে। যা হবে একটি মাইলফলক।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহীতে বর্তমানে ৩২০ জন কারারক্ষীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। তবে পূর্ণাঙ্গ প্রশিক্ষণ একাডেমী গড়ে তোলার পরে এখানে আরো বেশি পরিমাণে কারারক্ষীদের একসঙ্গে প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে। সেই হিসেবে অন্তত ৫০০ জনের প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে একটি করে ব্যাচে।

আগস্ট ২৯, ২০১৯ at ১৯:৫২:১৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এমআর/কেএ