অবশেষে কুখ্যাত রাজাকার পুত্র হাফিজুর গ্রেফতার

কুটিপয়ড়াডাঙ্গার রাজাকার পুত্র ভূয়া সাংবাদিক, দুর্ণীতিবাজ, চাঁদাবাজ, জঙ্গী ও সন্ত্রাসের মদদদাতা হাফিজুর রহমান বাবু, বকুল, জয়নাল, ফারুক, আপেল, মজিবর, হযরত, জনি, উকিল, সরু ও জাকারিয়া জয়নাল বিডিআরের বাড়িতে মসজিদ ও মাদ্রাসার নাম করে টাকা তোলা, এলাকায় জঙ্গী তৎপরতা ও সরকারের বিরুদ্ধে প্রায়ই গোপন বৈঠকে বসে। এ নিয়ে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনকে বহুবার অভিযোগ করে। তখন উক্ত অপরাধী চক্রটি গোপন বৈঠকের স্থান পরিবর্তন করে নাগেশ্বরী থানা এলাকায় অপরাধ সংগঠনের উদ্দেশ্যে নাগেশ্বরী পৌরসভাধীন বিদ্যুত পাড়া গ্রামস্থ আসামী মোঃ হাফিজুর রহমান বাবুর বসতবাড়ী সংলগ্ন মেইন গেটের সামনে তিন রাস্তার মোড়ে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সরকার বিরোধী ৭/৮ জনের অপরাধী চক্রকে ২৬ আগস্ট ২০১৯ ইং দিবাগত রাতে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে অভিযান চালায়, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই পালিয়ে গেলেও কুখ্যাত রাজাকার পুত্র হাফিজুর রহমান বাবু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ২৭ তারিখ সকালে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে চালান করে দেয়।

আমাদের প্রতিবেদক এ নিয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে জানতে পারে, হাফিজুর রহমান বাবু দীর্ঘদিন যাবত থানা নাগেশ্বরী এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ের অপকর্ম আমাদের হাতে চলে আসে। কুটিপয়ড়াডাঙ্গা গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উক্ত আসামী অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির লোক। সে প্রায়ই জয়নাল বিডিআরের বাড়িতে সরকার বিরোধী গোপন বৈঠকে মিলিত হয় এবং গ্রামের নিরীহ সহজ-সরল মানুষকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করে আসছে। বিশেষ করে তার বোন জামাই হাশেম, জয়নাল, ফারুক, জাকারিয়া, মজিবর, সরু, জনি, উকিলসহ তার নের্তৃত্বে অপরাধী চক্রটি নিরীহ গ্রামবাসীকে সর্বদা হেনস্থা করে আসছে।

অনুসন্ধানকালে আরও জানা যায়, হাফিজুর রহমান বাবু ও তার অনুসারীরা সম্প্রতি সরকারের উন্নয়নকাজে ব্যাপকহারে বাধা প্রদান করে এবং জয়নাল বিডিআরের বাড়ীতে গ্রামের নিরীহ লোকদের কাছে বিদ্যুত দেয়ার নাম করে দুই থেকে ৩ লক্ষ তুলে আত্মসাত করে। এলাকায় মসজিদ মাদ্রাসার নাম করে চাল ও টাকা তুলে সেটিও আত্মসাত করে খায়। আরও উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পল্লী বিদ্যুত গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে আসলে এ অপরাধী চক্রটি বাঁধার সৃষ্টি করে। পল্লী বিদ্যুতের লোকদের ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয় নির্মাণাধীন বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয় এবং হুমকি দিয়ে বলে এ গ্রামে বিদ্যুতের দরকার নেই। তখন গ্রামবাসী নাগেশ্বরী থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে নাগেশ্বরী থানা পুলিশের সহায়তায় পল্লী বিদ্যুতের লোকজন গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়। কিন্তু নির্মাণাধীন বিদ্যুতের যে লাইনটি অপরাধী চক্রটি কেটে দেয়, সেটা এখনও সংযোগ বিছিন্ন অবস্থায় আছে। এ গ্রামেও সংখ্যালঘুদের উপর রাজাকার পরিবার চক্রটি জুলুম ও নির্যাতন করে।

উল্লেখ্য যে, হাফিজুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে কুটিপয়ড়াডাঙ্গা গ্রামবাসী নাগেশ্বরী থানায় বিভিন্ন সময়ে জিডি নং- ৭০৭, তাং- ২০/০৬/১৯, জিডি নং- ৩৯২/১৮, তাং- ০৯/১০/১৮, জিডি নং- ১১৮৯, তাং- ২৩/০৭/১৯, জিডি নং- ৯৮০, তাং- ২৬/০৮/১৯ ইং। এ ছাড়াও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল নং-২, ঢাকায় মামলা নং- ৯৬/২০১৯, ধারা ৯(৩)/৩০, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত-০৩) মামলা রুজু হয় তার প্রমাণ পাওয়া যায়। জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম স্বারক নং- ০৫.৪৭.৪৯০০.০১৬.০২.০০৬.১৮ (২৪৮), তাং- ২০/১১/১৮ ইং স্বারকমূলে তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে গ্রামবাসী হাফিজুর রহমান বাবুসহ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান, নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বিভাগীয় কমিশনার (রংপুর), ডিআইজি রংপুর রেঞ্জ, অধিনায়ক র‌্যাব-১৩ (রংপুর) বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন।

কুখ্যাত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, টাকা আত্মসাৎকারী, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের মদদদাতা, ভূয়া সাংবাদিক, দূর্ণীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ী রাজাকারপুত্র হাফিজুর রহমান গ্রেফতার হওয়ায় এবং তার অপকর্মের চিত্র উঠে আসায় এলাকাবাসীর মধ্যে একদিকে যেমন স্বস্তি ফিরে এসেছে অন্যদিকে এলাকাবাসী আবার আতঙ্কেও রয়েছে যে, উক্ত রাজাকারপুত্র হাফিজুর রহমান বাবু ছাড়া ফেলে আমাদের উপর আবারও জুলুম ও অত্যাচার অব্যাহত রাখতে পারে। তাই এলাকাবাসীর দাবী হাফিজুর রহমান বাবু যেন জেল থেকে ছাড়া না পায় এবং সেই সাথে অন্য আসামীরাও যাতে দ্রুত গ্রেফতার হয় সেই আশায় রয়েছে।

আগস্ট ২৯, ২০১৯ at ১১:৪৬:২৪ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/এজিএল/কেএ