বিষাক্ত প্রাণী থেকে বাঁচার দোয়া

ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। পুরো জুলাই মাসে সারা দেশে ১৬ হাজার ২২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আর অগাস্ট মাসের প্রথম ৫ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৯৮৩ জন ডেঙ্গু রোগী। এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৬৫ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অর্থাত্ প্রতি ঘণ্টায় ৮৬ জনেরও বেশি নারী, পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন।

বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষতিকর বিষাক্ত পোকা-মাকড় ও প্রাণী থেকে মুক্ত থাকতে সাহাবায়ে কেরামকে শিখিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া। এ দোয়ার নিয়মিত আমলে যে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণ ও ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকবে মানুষ। হাদিসে এসেছে

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একবার এক লোককে বিচ্ছু (বিষাক্ত প্রাণী) দংশন করার কারণে লোকটি ব্যথার কারণে রাতে ঘুমাতে পারল না। সকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন, যদি সন্ধ্যা বেলায় এ দোয়াটি পড়তে তাহলে সকাল পর্যন্ত বিচ্ছুর (বিষাক্ত প্রাণীর) দংশন তাকে কোনো ক্ষতি করতে পারতো না।’ (মুসলিম, ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)

আরও পড়ুন :
নামাজ সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত
জান্নাত লাভের ছোট্ট একটি গুণ

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেখানো দোয়াটি হলো-
أَعُوْذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিং শাররি মা খালাক্বা।
অর্থ : আমি আল্লাহর সব পূর্ণ কালেমাসমূহের উসিলায়, তাঁর সৃষ্ট সব (বিষাক্ত) প্রাণীর অনিষ্টতা থেকে আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

এ দোয়ার ফজিলত ও উপকারিতা সম্পর্কে অন্য হাদিসে এসেছে-
হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি সন্ধ্যা বেলায় উক্ত দোয়াটি ৩ বার পড়বে, ওই রাতে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর বিষ তাকে কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’

হজরত সুহাইল ইবনে আবি সালেহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমাদের পরিবারের সবাই এ দোয়াটি মুখস্ত করে নিয়েছিল এবং নিয়মিত তা পড়তো, একদিন আমাদের পরিবারের একটি মেয়েকে বিচ্ছু দংশন করলো কিন্তু সে কোনো ব্যথাই অনুভব করেনি। (মুসনাদে আহমদ)

হজরত খাউলা বিনতে হাকিম সুলামি রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি কোনো এলাকায় অবতরণ করার পর উক্ত দোয়াটি পড়বে ওই এলাকা থেকে না যাওয়া পর্যন্ত তাকে কোনো কিছু (কোনো হিংস্র প্রাণী কিংবা মানুষ শত্রু) কোনো ধরণের ক্ষতি করতে পারবে না।’ (মুসলিম, তিরমিজি)।

প্রিয় নবির শেখানো এ দোয়াটির নিয়মিত আমলই মানুষকে মশাসহ সব ক্ষতিকর বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণ থেকে হেফাজত করতে পারে। তাই মানুষের উচিত বিষাক্ত পোকা-মাকড়, মশা, সাপ-বিচ্ছু, হিংস্র প্রাণীসহ যাবতীয় বিষাক্ত ক্ষতিকর জীবানূ থেকে মুক্ত থাকা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাতের ওপর আমল করার, সুন্নাতি জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

আগস্ট২৮, ২০১৯ at০৭:৫৭:৩৪(GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/গোনি/ইআ