দামুড়হুদা উপজেলার একমাত্র শিল্পপ্রতিষ্ঠান দর্শনার চিনিকল ঋণের

১৯৭ কোটি টাকা কৃষিঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরু চিনিকল। দর্শনা জনতা ব্যাংক শাখা থেকে এ ঋণ নেওয়া হয়েছে বলে জানা যায় । চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন কেরুজ চিনিকলের নামে নেওয়া এই ঋণের টাকা চিনিকলটি কোন খাতে ব্যবহার না হলেও ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষের। এ যেন উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর মতো অবস্থা।

জানা গেছে, প্রতি বছরই দর্শনা কেরুজ চিনিকলটি কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনে থাকে। চিনি উৎপাদন বিভাগে লোকসান হলেও ডিস্টিলারি বিভাগ তা পুষিয়ে দেয়। লাভ-লোকসানের এ দোলাচলে কেরুজ চিনিকলের সম্পদ মডগেজ রেখে চিনি ও খাদ্য শিল্পের আওতাধীন বিভিন্ন চিনিকলের আখচাষিদের কৃষি ঋণ দেওয়া হয়। এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে দর্শনা জনতা ব্যাংক শাখা থেকে ১৯৭ কোটি টাকা কৃষি ঋণ নেওয়া হয়। অথচ এ ঋণের বিপরীতে প্রতিবছর কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ ১৭ কোটি টাকা সুদ পরিশোধ করে থাকে।

আরও পড়ুন :
বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু
প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনায় নতুন কমিটি গঠন

এ ঋণ করা হয়েছিল সাবেক খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান এ কে এম দেলোয়ার হোসেনের আমলে। কিভাবে এই ঋণ বিতরণ করা হলো আর কোন কোন প্রতিষ্ঠানের চাষিরা ঋণ পেল তার কোনো হিসাব নেই কেরুজ কর্তৃপক্ষের নিকট। অথচ সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করে চলেছে কেরুজ কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরুজ চিনিকলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহেদ আলী আনছারী বলেন, ঋণের কোনো সুবিধা কেরুজ চিনিকলের কেউ ভোগ করল না অথচ বছর বছর ১৭ কোটি টাকার সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটিকে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শিল্প স্থাপনাগুলোর মধ্যে দর্শনা কেরু অ্যান্ড কম্পানি (বাংলাদেশ) লি একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু হয়। আজ এর বয়স ৮১ বছর। চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী দর্শনায় চিনিশিল্প, ডিস্টিলারি ও বৃহৎ শিল্প কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত।

প্রাথমিকভাবে দৈনিক ১ হাজার টন আখ মাড়াই করার মধ্য দিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয়করণ করা হয়। আর তখন থেকে আজ পর্যন্ত এটি কেরু অ্যান্ড কোং (বাংলাদেশ) নামে বাংলাদেশ সুগার অ্যান্ড ফুড ইন্ড্রাস্ট্রিজ করপোরেশনের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। এখানে চিনি, রেকটিফাইড স্পিরিট, দেশি মদ, জিন, হুইস্কি, রাম, ভদগা ও ভিনেগার এ শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির উৎপাদিত মূল পণ্য।

আগস্ট ২২, ২০১৯ at ২২:৩০:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/তআর/আজা