৫ টাকার দিনমজুর এখন কোটিপতি, দ্য গ্রেট খালি

‘দ্য গ্রেট খালি’ কুস্তিগীর হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। ভারতের হিমাচল প্রদেশের সিরমোর জেলার ধিরাইনা গ্রামের এক গরীব পাঞ্জাবি রাজপুত পরিবারে জন্ম খালির। দুনিয়া তাকে খালি হিসেবে চিনলেও, তার আসল নাম দলীপ সিংহ রাণা। হিমাচলের ছোট্ট গ্রামের সেই দলীপ ছিলেন ডব্লুডব্লুইর এক খ্যাতনামা মুখ।

ভারতের প্রথম কুস্তিগীর যিনি ডব্লুডব্লুইতে অংশ নিয়েছেন। ছোটবেলায় এমনও দিন গিয়েছে, যে আড়াই টাকা স্কুলের ফি দেয়ার মতো সামর্থ্যও ছিল না তার পরিবারের।

আজ গোটা বিশ্ব তাকে দ্য গ্রেট খালি হিসেবেই চেনে। খালির এই গ্রেট হওয়ার পিছনে যে কাহিনি রয়েছে তা শুনলে অবাক হতে হয়। ‘দ্য ম্যান হু বিকেম খালি’ এই বইটিতেই রয়েছে তার সাফল্যের কাহিনি। ‘দ্য ম্যান হু বিকেম খালি’- এই বইতে খালি বলেছেন, ‘সাল ১৯৭৯।

আরও পড়ুন :
পিসির বাড়ী বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন

খালির দাবি, স্কুলের শিক্ষক অন্য ছাত্রদের সামনে তাকে অপমান করেছিলেন। বইতে খালি এ প্রসঙ্গে বলেন, সে দিন খুব খারাপ লেগেছিল আমার। স্কুলের সহপাঠীরাও হাসি ঠাট্টা করতে শুরু করে। এরপরই খালি সিদ্ধান্ত নেন আর স্কুলমুখো হবেন না। স্কুলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। সেই শেষ স্কুলে যাওয়া। এরপরই দিনমজুরের কাজে লেগে পড়েন তিনি।

দিনমজুরের কাজ করার পাশাপাশি বাবার চাষের কাজেও সাহায্য করতেন। আট বছর বয়স থেকেই মজুরের কাজ শুরু করেন খালি। এর জন্য মজুরি হিসেবে দৈনিক ৫ টাকা পেতেন। আর এই ৫ টাকাই ছিল একরত্তি ছেলের কাছে বড় মূলধন। ছোটবেলায় খালি অ্যাক্রোমেগালি নামে এক দুর্লভ রোগের শিকার হন। তারপর থেকেই তার চেহারায় পরিবর্তন আসতে শুরু করে।

১৯৯৩ সালে পাঞ্জাব পুলিশে যোগ দেন তিনি। পুলিশ নয়, কুস্তিগীর হওয়ার লক্ষ্য ছিল খালির। তাই জালন্ধরে পৌঁছেই জিমে ঢোকেন। নিজেকে কুস্তিগীর হিসেবে প্রস্তুত করেন। ১৯৯৭ ও ১৯৯৮ সালে পরপর দু’বার মিস্টার ইন্ডিয়া হন তিনি।

এরপরেই আমেরিকা থেকে স্পেশাল রেসলিং ট্রেনিংয়ের জন্য ডাক পান তিনি। ২০০০ সালে প্রথম পেশাদার রেসলার হিসেবে ‘জায়ান্ট সিংহ’ নামে অল প্রো রেসলিংয়ে নামেন। ২০০৬ সালে প্রথম ভারতীয় পেশাদার রেসলার হিসেবে ডব্লুডব্লুই-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট বিভাগে ডব্লুডব্লুই চ্যাম্পিয়ন হন।

এই মুহূর্তে বছরভর ডব্লুডব্লুই থেকে বেতন পান প্রায় ৭ কোটি টাকা। বোনাস পান ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং ব্র্যান্ড এনডর্সমেন্ট প্রায় ১৮ লাখ।

আগস্ট ১৭, ২০১৯ at ২০:০৫:২৯ (GMT+06)
দেশদর্পণ/আহা/আক/কেএ/আজা